জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ড. জেবউননেছা রচিত “বেদনাতুর ১৯৭৫ আগষ্ঠের শহিদদের আলেখ্য” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে কোর্চ মেট ও প্রিয় বন্ধু লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সম্পর্কে স্মৃতিচারন করেন মেজর জেনারেল অবঃ আলাউদ্দীন এম এ ওয়াদুদ বীর প্রতীক।
এসময় মেজর অব: ওয়াদুদ বলেন, তার এই বন্ধুতের খেসারত ২০০২ সালে বিএনপি জামাত জোট সরকারের সময় তাঁর চাকরির মেয়াদ ১৩ বছর বাকি থাকার সত্বেও তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করে।
জেনারেল ওয়াদুদ স্মৃতিচারনে আরও বলেন, এই পৃথিবীতে খুব কম ভাগ্যবান লোক আছে যাদের সত্যিকারের বন্ধু আছে। আমার ছিল অল্প সময়ের জন্য। ১৯৭৫ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় স্ট্যান্ডার্ড মিলিটারি কোর্স-৮-এর প্রার্থিত সভরিন প্যারেড।
বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কমিশন লাভ করি আমরা তিন জন গর্বিত তরুণ। একজন হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট বীর শহিদ শেখ জামাল এবং আমরা দুজন অফিসার ক্যাডেট আমি আলাউদ্দীন মো. আবদুল ওয়াদুদ (পরবর্তী সময়ে মেজর জেনারেল) ও মাসুদুল হাসান (পরবর্তী সময়ে ক্যাপ্টেন)।
শেখ জামাল কখনও কাউকে বুঝতে দিতেন না এবং সবার সাথে এত আপনভাবে মিশতেন মনেই হত না যে সে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুত্র ।
তিনি বলেন, তাঁর সেক্রিফাইস অসাধারণ বড় মনের মানুষ না হলে কেউ করত পারে না। যখন ১লা আগস্ট ১৯৭৫ থেকে স্যান্ডহার্স্টে রেগুলার ক্যারিয়ার কোর্স শুরু হবার কথা। শেখ জামাল এই প্রশিক্ষণ গ্রহণের সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও অংশ নিলেন না। কারণ তাঁর দুই প্রিয় বন্ধু আমি আর মাসুদ বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছিলাম। তাঁর ছিল মায়ের জন্য গভীর টান।
মাত্র দেড় মাস পর এই সিদ্ধান্তই তাঁর জীবনকে তছনছ করে দেবে, কে জানতো ! ১৯৭৫ সারের কালো রাত্রিতে জাতি হারাল ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর শহিদ পরিবারকে আর আমি হারালাম আমার প্রিয় বন্ধুকে যা পূরণ হওয়ার নই।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি, মুখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান, ইমিরিটাস অধ্যাপক এবং সভাপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কমিটি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ডঃ আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রাক্তন উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশেষ অতিথি হিসাবে ছিলেন হুরুন্নেসা মঞ্জ (বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের মেজ কন্যা), অধ্যাপক ডঃ ফারজানা ইসলাম (সদস্য, উপদেষ্টা পরিষদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), অধ্যাপক ডঃ সৈয়দ হুমায়ুন আখতার (উপাচার্য, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়), শ্যামল দত্ত (সম্পাদক, ভোরের কাগজ ও সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাব) সুলতানা নাদিরা, এমপি (শহিদ আব্দুল নঈম খাঁন রিন্টূর বড় বোন), আফরোজা জামিল (শহিদ কর্নেল জামিল উদ্দিনের কন্যা), বীর মুক্তিযোদ্ধা ম হামিদ (বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ শেখ কামাল উদ্দিনের নাট্যবন্ধু), অধ্যাপক গীতাঞ্জলি বড়ুয়া (শহিদ শেখ রাসেলের সহপাঠী), মুস্তাফিজুর রহমাল (বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ সিদ্দিকুর রহমানের জেষ্ঠ পুত্র), গোলাম আহমেদ মৃধা (শহিদ সুলাতানা কামালের ছোট ভাই)।
জেএন/এফও/পিআর