চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেছেন, গতকাল রাতে ঘটনা শোনামাত্রই আমরা মেডিকেলে আহত শিক্ষার্থীদের দেখতে যাই। সেখানে তাদের সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় আমরা যখন আহতদের জীবন বাঁচানোর জন্য ব্যস্ত তখন একদল বিশ্ববিদ্যালয়ে রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদের ওপর এভাবে হামলা করবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। যারাই এমন কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
উপাচার্য আরও বলেন, প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমাদের। তবুও বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিক ভাবেই চলবে। আমরা সেভাবেই কাজ করছি। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মামলা করা হয়েছে। সেগুলো পরে বিস্তারিত জানানো হবে। তদন্ত কমিটির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত আসবে।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ক্যাম্পাসগামী শাটল ট্রেনে আসার সময় গাছের আঘাতে অন্তত ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের প্রথমে পার্শ্ববর্তী ফতেয়াবাদ ক্লিনিকে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন নয়জন। তাদের মধ্যে আইসিইউতে আছেন তিনজন এবং নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ছয়জন। তাদের মধ্যে চবি শিক্ষার্থী ছাড়াও কলেজ পড়ুয়া এবং চাকরিজীবীও একজন আছেন।
ঘটনার পর রাত সাড়ে ৮টার শাটল ট্রেন ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছালেই শিক্ষার্থীরা নেমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে দেন। এ সময় তারা আগুন জ্বালিয়ে প্রশাসনের নিকট শাটল ট্রেনের বগি বাড়ানোর দাবি জানান। এছাড়াও জিরো পয়েন্টে অবস্থিত পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালান শিক্ষার্থীরা।
পরিবহন দপ্তরের দাবি, ৫০টির অধিক বাস ও মিনিবাস ভাঙচুর করা হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিবহন দপ্তরে থাকা দুটি এসি বাসসহ ৩০টি বড় বাস, ১৮টি প্রাইভেটকার, ২টি পিকআপ, ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।
শাটল ট্রেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর একমাত্র বাহন। শিক্ষার্থীদের তুলনায় শাটল ট্রেনের বগি অপর্যাপ্ত হওয়ায় বাধ্য হয়ে ছাদে উঠতে হয় শিক্ষার্থীদের। দীর্ঘদিন ধরে শাটলের বগি বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসলেও মিলছিল না কোনো সুফল। যার ফলে ঘটছে দুর্ঘটনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, শাটল ট্রেনের ছাদে থাকা প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী গাছের বাড়ি খেয়ে আহত হয়েছেন। এখানে আমাদের কোনো হাত নেই। শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অথচ উপাচার্যের বাসভবন ভাঙা হয়েছে। পুলিশ বক্স মারাত্মকভাবে ভাঙচুর করা হয়েছে।অনেকগুলো বাস ভাঙা হয়েছে। এগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ হতে পারে না। যারা ক্যাম্পাসে এই তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত তারা কোনোভাবেই পার পাবে না।
জেএন/এমআর