বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নাই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশ ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ড শর্তযুক্তভাবে স্থগিত করা হয়। পরিবর্তন করতে হলে খালেদা জিয়ার শর্তযুক্ত মুক্তি বাতিল করে সহাবস্থানে আনতে হবে।
এরপর আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে। তাকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে রোববার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন— আইনমন্ত্রী বলতে পারবেন। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আবেদনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হয়।
সেই আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের ওপর নির্ভর করে ব্যাপারটি।
আনিসুল হক আরও বলেন, আমি আগেও বলেছি, এখনও বলছি— বেগম খালেদা জিয়াকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা ১ এর ক্ষমতাবলে শর্তযুক্তভাবে সাজা স্থগিত করা হয়েছে এবং মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেটা প্রধানমন্ত্রীর মহানুভবতায়। এখন আইনের যে পরিস্থিতি তাতে যদি কোনো পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার যে আগের শর্তযুক্ত মুক্তি, সেটাকে বাতিল করতে হবে। বাতিল করে সহবস্থানে যাওয়ার পরে তার পরে আবার অন্য বিবেচনা করা যাবে। আমার মনে হয় আইনের অবস্থান থেকে সরকারের আর কিছু করার নেই।
এই ইস্যুতে স্বরাষ্ট্র এবং আইন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এক ধরনের ঠেলাঠেলি লক্ষ্য করা যাচ্ছে— এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে কোনো ঠেলাঠেলি নেই। আমি পরিষ্কার করেছি, যদি কোনো আবেদন আসে, সে আবেদন সরাসরি আইন মন্ত্রণালয়ে করা যায় না। এটি আইন। সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে করতে হবে আইন মোতাবেক। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। এর মধ্যে ঠেলাঠেলির কী দেখলেন আপনারা?
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক বলছেন, ১৯৯০ সালের ১৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে একটি ঘোষণা আছে। সেখানে বলা আছে যদি কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয় তখন দেশের সরকারের দায়িত্ব তাকে বিদেশে পাঠানো। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, একটা কথা জাতিসংঘে বলা আছে। সেটা হচ্ছে আমাদের দেশের আইনটা অগ্রাধিকার পাবে এবং সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশের আইনে যে অবস্থান তাকে ৪০১ ধারায় যে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আমি বহুবার বলেছি, এই আইনের অবস্থায় এটার কোনো পরিবর্তন করা যাবে না।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে আইনের শাসন আছে। আমরা আদালতকে শ্রদ্ধা করি।
জেএন/এমআর