ওশান অ্যাপারেলস’র চীন থেকে আনা কনটেইনারটি এক মাস ধরে পড়েছিল বন্দরে। আমদানিকারক এ চালানের কায়িক পরীক্ষার জন্য রাজি হচ্ছিল না কিছুতেই। বুধবার (১৯ নভেম্বর) জোর করে কনটেইনারটি নামিয়ে (কিপ ডাউন) করে কায়িক পরীক্ষা করেন অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখার কর্মকর্তারা। এতে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। পলিস্টার ফেব্রিকস আমদানির ঘোষণা দিয়ে তারা এনেছে সোফার কাপড়। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করতেই এ অপকৌশল নিয়েছিল তারা। কিন্তু তাদের এ চেষ্টা ধোপে টেকেনি এআইআর শাখার নাছোড়বান্দা কর্মকর্তাদের কৌশলের কাছে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের সিইপিজেডের ওশান অ্যাপারেলস চীন থেকে পলিস্টার ফেব্রিকস আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল। কিন্তু তারা এনেছে সোফার কাপড়।
বন্ড সুবিধা অনুযায়ী, যে পরিমাণ পলিস্টার ফেব্রিকস আমদানির কথা ছিল তাতে শুল্ক কর দিতে হত তিন হাজার ১২৩ টাকা। অন্যদিকে যে পরিমাণ সোফার কাপড় আনা হয়েছে তার কাস্টমস শুল্ক কর ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
কিন্তু খালাসের আগে কায়িক পরীক্ষায় কাস্টমসের এআইআর (অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ) শাখার হাতে চালানটির গরমিল ধরা পড়ে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস কমিশনার ড. এ কে এম নুরুজ্জামান জয়নিউজকে বলেন, ওশান অ্যাপারেলস চীন থেকে পলিস্টার ফেব্রিকস আনার ঘোষণা দেয়। কিন্তু কায়িক পরীক্ষা করতে গিয়ে কনটেইনারের ভেতর মেলে সোফার কাপড়। প্রতিষ্ঠানটি যে পরিমাণ পলিস্টার ফেব্রিকস আমদানির ঘোষণা দিয়েছিল তার কাস্টমস শুল্ক কর ৩ হাজার ১২৩ টাকা। বিপরীতে তথ্য গোপন করে আনা কাপড়ের কর ৭৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা।
এআইআর শাখার ডেপুটি কমিশনার মো. শাহীনূর কবির পাভেল জয়নিউজকে বলেন, কাস্টমস কমিশনারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা ওশান অ্যাপারেলসের পণ্যের খালাস স্থগিত করি। চীন থেকে আনা কনটেইনারটি এক মাস ধরে বন্দরে ছিল। আমদানিকারককে কায়িক পরীক্ষার জন্য কয়েকবার অনুরোধ করা হলেও তারা রাজি হয়নি। বুধবার (১৯ নভেম্বর) আমরা জোর করে কনটেইনারটি ‘কিপ ডাউন’ করে কায়িক পরীক্ষা করি। এতে দেখা যায়, পলিস্টার ফেব্রিকস ঘোষণা দিয়ে তারা সোফার কাপড় এনেছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, পণ্য খালাসের দায়িত্বে ছিল সিএন্ডএফ এজেন্ট প্যাক রিল্যায়েন্স এজেন্সী। সিএন্ডএফ এজেন্ট ও কাস্টমস হাউসের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে চালানটির শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষা শেষে ঘোষণা বহির্ভূত অতিরিক্ত পণ্য পাওয়া যায়। পণ্যগুলোর শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় ৮০ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। যার শুল্ক কর ৭৪ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা। চালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ও শুল্ককর প্রায় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ ৩৩ হাজার টাকা। চালানের বিল অব এন্ট্রি নম্বর ২২৫২৪১। ১৪ অক্টোবর চালানটির বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টমস কর্মকর্তারা কাজ শুরু করে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য আনার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ১৯ নভেম্বর চালানটি জব্দ করা হয়।