খেলাপি ঋণ কমানোর নানা উদ্যোগের পরও অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। খেলাপি ঋণের সব রেকর্ড ভাঙল। চলতি ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত খেলাপি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। আর শেষে তিন মাসেই খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৪ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।
রোববার (১ অক্টোবর) ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তথ্য বলছে, ব্যাংকিং খাতে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা।
এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। খেলাপি ঋণের এ অঙ্ক দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।
শেষ ছয় মাসে (ডিসেম্বর-২০২২ থেকে জুন-২০২৩) বেড়েছে ৩৫ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রথম তিন (জানুয়ারি-মার্চ) মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা।
সে হিসাবে শেষ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে সর্বোচ্চ। শেষ প্রান্তিকের খেলাপি ঋণ কমানোর রাখার চেষ্টা করা হয়।
ত্রৈমাসিকভিত্তিতে ঋণের তথ্য প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সে হিসাবে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিক জুন শেষের খেলাপি ঋণের তথ্য আগস্টের মাঝামাঝি প্রকাশ করার কথা। কিন্তু নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে দ্বিগুণ সময় নিয়ে ফেলে, অক্টোবর মাসে এসে প্রকাশ করলো। যখন ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের হিসাব করার সময় এসে গেছে; আরও ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ বেড়েছে।
জুন প্রান্তিকে খেলাপি ঋণ এক লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা হয়েছে, এ ঋণ ‘খাতা কলমে’। প্রকৃত খেলাপি ঋণ আরও অনেক বেশি। কারণ এর মধ্যে পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণের হিসাব নেই, এগুলো যোগ করলে দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি সংকটে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে। ২০২০ ও ২০২১ সালের আরেক বৈশ্বিক মোকাবিলা করে না দাঁড়াতেই এ অবস্থা তৈরি হয়। এ অভিঘাত মোকাবিলা করতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি বছরে ঋণের কিস্তির অর্ধেক পরিশোধে রয়েছে বিশেষ ছাড় দেয়। কম সুদে ঋণ নেওয়া ও ঋণ পরিশোধে কিছুটা ছাড় ছিল ২০২২ সালেও।
তারও আগে মহামারির করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে ঋণ পরিশোধে পুরোপুরি ছাড় দেওয়া হয়েছিল। ঋণ শোধ না করেও গ্রাহককে ‘খেলাপি স্ট্যাটাস থেকে মুক্ত রাখার সুযোগ করে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কোনো উদ্যোগই কাজে এলো না।
জেএন/এমআর