সমুদ্র সৈকতে শ্বশুরের কাটা মাথা খুঁজছেন অভিযুক্ত পুত্রবধূ

ছেলেদের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া শ্বশুর মো. হাসান (৬১)র কাটা মাথার সন্ধানে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় চষে বেরিয়েছেন অভিযুক্ত পুত্রবধূ আনারকলি।

- Advertisement -

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে গতকাল রবিবার (১ অক্টোবর) থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সাগর পাড় তন্নতন্ন করেও ভুক্তভোগীর কাটা মাথার সন্ধান পাওয়া যায়নি।

- Advertisement -google news follower

সোমবার দুপুরে জোয়ারের কারণে তল্লাশি কার্যক্রম স্থগিত রাখা হলেও চট্টগ্রামের আলোচিত মো. হাসান হত্যাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত পুত্রবধূ আনারকলিকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছে পিবিআই।

এর আগে গত শুক্রবার হাসান আলী হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত তার পুত্রবধূ আনারকলিকে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন শনিবার আদালতে হাজির করলে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।

- Advertisement -islamibank

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান জানান, হাসান হত্যাকাণ্ডে পুত্রবধু আনারকলি সরাসরি জড়িত নয়। তবে তিনি হত্যার আলামত গোপনে সহযোগী।

প্রথমে তাকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো দা উদ্ধার করা হয়। এরপর রবিবার ও সোমবার সকাল পর্যন্ত নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন এলাকায় তাকে নিয়ে শ্বশুড়ের কাটা মাথা উদ্ধারে অভিযান চালানো হয়। তবে এখনো কাটা মাথার খোঁজ মেলেনি।

পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, মূলত তার স্বামী অর্থাৎ হাসানের ছোট ছেলে সফিকুর রহমান জাহাঙ্গীরের বাসায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এরপর হাসানের মরদেহ খণ্ডবিখণ্ড করে আনারকলির লাগেজে করে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর আরেকটি থলেতে করে কাটা মাথা ফেলে দেওয়া হয়। এছাড়া শরীরের কিছু অংশ আকমল আলী রোডের একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে পতেঙ্গা থানাধীন ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় একটি লাগেজে মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড পাওয়া যায়। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ। প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল।

এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান গণমাধ্যমকে জানান, লাগজে খণ্ডিত মরদেহ পাওয়া ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করেছে এবং ভুক্তভোগীর শরীরের অন্যান্য অংশও উদ্ধার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর নাম মো. হাসান (৬০)। তিনি বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে।

এরপর খুনের রহস্য উদঘাটনে নেমে পিবিআই হত্যাকাণ্ডে জড়িত ভুক্তভোগীর স্ত্রী ও ছেলেকে গ্রেফতার করে তাদের আদালতের অনুমতি নিয়ে রিমান্ডে নেন। রিমান্ড শেষে দুজনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে ভুক্তভোগীর ছেলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এতে বাবাকে হত্যার কারণ, কীভাবে হত্যা করা হয় এবং কীভাবে মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় তার বর্ণনা দেন ছেলে।

ছেলের জবানবন্দি মতে পিবিআই জানায়, অন্তত ২৮ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এসময়ে তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না পরিবারের সদস্যরা। বছরখানেক আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেটি বিক্রি করতে চেয়েছিলেন ভুক্তভোগী হাসান।

এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেন।

জেএন/রাজীব

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM