রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার সবচেয়ে দুর্গম ইউনিয়ন দুমদুম্যা ও মৈদং। উপজেলা সদরের সঙ্গে দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। অথচ বর্ষায় উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এই দুই ইউনিয়ন।
মৈদংমূখ ছড়ার উপর একটি সেতু না থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হয় দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের। এ কারণে উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয় স্থানীয় কৃষকদের। এই একটি সেতুর জন্য পিছিয়ে আছে দুটি ইউনিয়ন।
এলাকাবাসী জানান, মৈদংমুখ ছড়ায় সেতু না থাকায় বর্ষায় দুই ইউনিয়নের মানুষ উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এতে দুই ইউনিয়নের চার শতাধিক পরিবারকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সরেজমিন মৈদং ইউনিয়নের মৈদংমুখ ঘুরে দেখা যায়, সেতু না থাকায় মৈদং ইউনিয়নের ফকিরাছড়ি, হাজাছড়ি, জামুরাছড়ি, ছোট মন্দিরাছড়া, মগাছড়ি, জামেরছড়ি এবং দুমদুম্যা ইউনিয়নের বস্তিপাড়া, বরকলক, ডানে তেছড়িপাড়ার মানুষের দুর্ভোগের চিত্র। বাঁশ ও গাছের সাঁকো পাড়ি দিয়ে বাজারে যাওয়া-আসা করছেন স্থানীয়রা। বর্ষায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের খরস্রোতা মৈদংছড়া পার হতে হয় বলে জানান স্থানীয়রা।
গ্রামের সরৎ দেবী তংচঙ্গ্যা, তোবী, নঞ্চিলতা, যাত্রাপুদি ও রাংগা সোনা চাকমা বলেন, মৈদংমুখ ছড়ার উপর সেতু না থাকায় বর্ষা এলে ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে খুব ভয় হয়। তাই বৃষ্টি হলেই ছেলে-মেয়েদের স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়।
স্থানীয় হেডম্যান সম্রাট চাকমা ও কার্ব্বারী ধনঞ্জয় চাকমা জয়নিউজকে বলেন, একটি সেতুর কারণে গ্রামের উন্নয়ন হচ্ছে না। স্থানীয় কৃষকরা তাদের জমিতে উপাদিত কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মৈদং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সাধনা নন্দ চাকমা বলেন, মৈদংমুখ ছড়ার উপর একটি সেতু নির্মাণ করা হলে শুধু মৈদং ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হবে না, উপজেলা সদরে সঙ্গে সরাসরি মৈদং ও দুমদুম্যা ইউনিয়নের যোগাযোগ স্থাপিত হবে।
ইউপি সদস্য অনিল চাকমা বলেন, ৯টি গ্রামে চার শতাধিক পরিবারের বসবাস। এখানে ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১২০ হেক্টরের মতো চাষাবদের জমি রয়েছে। অথচ একটি সেতুর কারণে কাঙ্খিত উন্নয়ন হচ্ছে না।
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রিটন চাকমা জয়নিউজকে বলেন, এলাকার জনস্বার্থে সেতুটি নির্মাণ খুবই জরুরি। কিন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য উপজেলা পরিষদের বরাদ্দে এই সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়। সুতরাং এলাকাবাসী দুর্ভোগ নিরসনে পার্বত্য মন্ত্রণালয়, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের পদস্থ কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
একই প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মর্কা মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, সম্প্রতি এলাকাটি পরির্দশন করেছি। মৈদংমুখ ছড়ার উপর সাঁকো বেয়ে ঝুঁকিতে পারাপার হতে হয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষে সেতুটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।