তৃতীয় দফা সন্ধানেও মেলেনি কাটা মাথা,ছোট ছেলে গ্রেফতার

চট্টগ্রামের আলোচিত মো. হাসান আলী হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী তার ছোট সন্তান শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীরকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

- Advertisement -

গতকাল শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে জাহাঙ্গীরকে ঢাকার হাজারিবাগ এলাকার একটি ট্যানারি থেকে গ্রেফতার করে সংস্থাটি।

- Advertisement -google news follower

পরে শনিবার (৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেফতার জাহাঙ্গীরকে সাথে নিয়ে তৃতীয় দফায় বাবা হাসান আলীর কাটা মাথার সন্ধানে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র পাড়ে যায় তদন্তকারী সংস্থা।

তবে এবারও ব্যর্থ। সকাল ১০টা পর্যন্ত দীর্ঘ খোঁজাখুজির পরও বাবার কাটা মাথার খোঁজ দিতে পারলেন না ছেলে জাহাঙ্গীর। পরে তাকে বেলা পৌনে ১১ টার দিকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

- Advertisement -islamibank

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার জাহাঙ্গীর বলেন, বাবা ২৮ বছর পর ফিরে এসে বাড়ির ভিটে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলো। মায়ের জন্য কালো জাদু করেছিলো এমন ভ্রান্ত ধারনা থেকেই বাবার প্রতি ক্ষোভ জন্মে দুই সন্তানের।

মূলত সম্পত্তির লোভে বাবাকে গামছা দিয়ে প্রথমে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে দুই ভাই মিলে বাবার লাশটি দশ খন্ড করে এক একটি টুকরো ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ফেলে দেন এবং ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর ও তার স্ত্রী আনারকলি মিলে বাবার কাটা মাথা পতেঙ্গা সাগরপাড়ে ফেলে দিয়েছিল।

সেই কাটা মাথার সন্ধানে এর আগেও দুই দফায় জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলিকে সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র পাড় চষে বেড়িয়েছে তদন্তকারী সংস্থাটি। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে গ্রেফতারের পর ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে শনিবার সকালে তৃতীয় দফায় মাথার সন্ধানে যাই পিবিআই টিম। কিন্তু খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বাবা হাসান আলীকে ছোট ছেলে জাহাঙ্গীর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনের একটি বাসায় নিয়ে যায়।

পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর সন্তানরা মিলে হাসানকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে। গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে পড়ে থাকা একটি লাগেজ থেকে মানুষের শরীরের ২টি হাত, ২টি পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশসহ মোট ৮টি খন্ড উদ্ধার করে পুলিশ।

ভুক্তভোগীর মাথা না থাকায় পুলিশ তাৎক্ষণিক লাশের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি। ফলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদেরকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির।

পরে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে পিবিআই টিম। লাগেজে পাওয়া কাটা হাতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের সহায়তায় পরিচয় জানা যায়। জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী নিহত ব্যক্তির নাম মো. হাসান আলী। তিনি বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। তবে পরিচয় পত্রে তার বর্তমান ঠিকানা লেখা ছিলো সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনি এলাকা।

এই ঘটনায় নিহত হাসান আলীর স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম (৫০), দুই সন্তান মোস্তাফিজুর রহমান ও শফিকুর রহমান ওরফে জাহাঙ্গীর এবং ছোট সন্তান জাহাঙ্গীরের স্ত্রী আনারকলি গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যে হাসানের শরীরের অন্যান্য অংশ এবং হত্যার বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করে পিবিআই কর্মকর্তারা।

এর আগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাবাকে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদ্দাম হোসেনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ভুক্তভোগীর বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান এবং ৩ অক্টোবর একই আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন পুত্রবধূ আনারকলি।

জেএন/রাজীব

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM