লজ্জা-শরম ভেঙে বিএনপি নেতাদের পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনে চড়ার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতারা চুপি চুপি পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে গেছেন, লজ্জা লাগে। এখনো বিএনপি নেতাদের অনুরোধ জানাবো, লজ্জা-শরম ভেঙে আসুন আপনারা, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেনে চড়ুন। টিকিটটা আমরাই কেটে দেবো। আবার বিনা টিকিটে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না।’
বুধবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রংপুর ও দিনাজপুর জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসময় আওয়ামী লীগের পরিচয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের সংগঠন। তৃণমূলের নেতারা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা যখন বিরোধীদলে ছিলাম, আমরা প্রচণ্ড শক্তিশালী সংগঠন ছিলাম। কারণ আমাদের ভিত্তি জনগণ ও তৃণমূলের নেতাকর্মী। সেই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সব ষড়যন্ত্র, চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শেখ হাসিনা পরপর তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, আওয়ামী লীগ রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়েছে।’
আজও নানামুখী ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ করার জন্য একটি মহল উঠেপড়ে লেগেছে, একটি মহল দেশে তাঁবেদার সরকার বসাতে চায়। হামিদ কারজাই মার্কা সরকার বসাতে চায়। আরেকটি মহল সেটির মদদদাতা হিসেবে কাজ করছে। সেই প্রেক্ষাপটে আজকের এই বৈঠক তৃণমূলকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কার্যক্রমের অংশ। কারণ আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি দেশের কোনো শক্তি নেই আওয়ামী লীগকে পরাজিত করতে পারে। সেজন্য ঐক্য এবং সংহতির ওপর আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’
পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশের উদাহরণ টেনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট তিন দশকের বেশি ক্ষমতায় ছিল সংগঠনের কারণে। মালয়েশিয়া যে দলের নেতৃত্বে স্বাধীনতা অর্জন করেছে, সেই দল পাঁচ দশকের বেশি ক্ষমতায় ছিল সংগঠনের কারণে। সিঙ্গাপুরে যে দলের নেতৃত্বে স্বাধীনতা এসেছে, সেই দল এখনো রাষ্ট্র ক্ষমতায়। সেখানেও বহুমুখী গণতন্ত্র, কিন্তু সে দল এখনো রাষ্ট্র ক্ষমতায়।’
তিনি বলেন, ‘পরপর চারবার এবং পঞ্চমবারের মতো যদি জনগণ আমাদের দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়, আগামী পাঁচ বছরে ইনশাআল্লাহ দেশ স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে যাবে। তাহলে বিশ্ববাসী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বদলে যাওয়ার গল্প শুনবে। আজ যেমন আমরা লি কুয়ানের নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর বদলে যাওয়ার গল্প শুনি, মাহাথির মোহাম্মদের নেতৃত্বে মালয়েশিয়ার বদলে যাওয়ার গল্প শুনি, বিশ্বনেতারা আজ বাংলাদেশ বদলে যাওয়ার গল্প বলেন।’
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মার্কিন জরিপে উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা ৭০ শতাংশ। পরশু আইএমএফ রিপোর্ট দিয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশ। আর পুরো পৃথিবীর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৩ শতাংশ। আমি জানি না, এসব জরিপ মির্জা ফখরুল সাহেবদের চোখে পড়ে কি না। তাদের চোখেও সমস্যা আছে, কানেও সমস্যা আছে। একই সঙ্গে মনের সমস্যা আছে, বোধশক্তির সমস্যা আছে। এ কারণে তারা এগুলো দেখেও দেখে না, শুনেও শোনে না।’
জেএন/এমআর