চিরকালের জন্য থেমে গেছে সিংহী নোভার হুংকার। শনিবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় মারা যায় এই সিংহী। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১৮ বছর ৪ মাস।
বার্ধক্যজনিত জটিলতায় পশুর রাণী নোভার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর শাহাদাত হোসেন শুভ।
তিনি বলেন, প্রায় ১ বছর ধরে বার্ধক্যজনিত জটিলতায় অসুস্থ ছিল নোভা। গত ৬ মাস ধরে পেছনের পা প্যারালাইসড ছিল।
গত ২৬ তারিখ থেকে খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর শনিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে নোভা। এতে চিড়িয়াখানার কর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
তিনি বলেন, নোভার পোস্টমর্টেম ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে ভবিষ্যতের জন্য নোভার কংকাল সংরক্ষণের চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।
কংকাল যদি রাখার ব্যবস্থা করা যায় সেভাবে প্রসেসিং করতে হবে। এরপর নোভার মৃতদেহ মাটিচাপা দেওয়া হবে।
শুভ বলেন, সিংহের গড় আয়ু সাধারণত ১৫ থেকে ১৭ বছর হয়। সিংহ-সিংহী আড়াই বছর বয়সেই প্রজননক্ষম হয় এবং তিন বছরের মধ্যে প্রথম বাচ্চা প্রসব করে। ১২ বছর পর এ প্রাণিগুলোর প্রজনন ক্ষমতা আর থাকে না। এর মধ্যে সেগুলো সর্বোচ্চ ৫ বার শাবকের জন্ম দেয়। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নোভার কোলে কোন শাবকের জন্ম হয়নি।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, ২০০৫ সালের ১৬ জুন সিংহ দম্পতি রাজ-লহ্মীর ঘরে বর্ষা ও নোভার জন্ম হয়। তাদের জন্মের কিছুদিন পর তাদের মা লহ্মী এবং ২০০৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাবা রাজ মারা যায়। প্রায় ১১ বছর নিঃসঙ্গ থাকার পর নোভার জন্য সঙ্গী আনার উদ্যোগ নেয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
২০১৬ সালে অদল-বদল প্রক্রিয়ায় বর্ষাকে রংপুরে পাঠিয়ে সেখান থেকে আনা হয় সিংহ বাদশাহকে। চট্টগ্রামে আসার পর বাদশাহর নাম নোভার নামের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয় নভ। ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর বাদশাহকে চট্টগ্রামে এনে কিছুদিন আলাদা খাঁচায় রাখা হয়।
তার কিছুদির পর ২২ সেপ্টেম্বর সিংহ এবং সিংহীকে এক খাঁচায় দেওয়ার সময় বেশ ধুমধামের সহিত বিয়ের আয়োজন করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ছয় বছর পর ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর ১৯ বছর বয়সে নভ বার্ধক্যের কারণে মারা গেলে নোভা আবারও নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ে।
এরপর গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৬ তারিখ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় পশুর রাণী নোভা। সঙ্গী নভ মারা যাওয়ার ১ বছরের মাথায় জীবন প্রদীপ নিভে গেল নোভারও।
জেএন/এমআর