চট্টগ্রামে পুলিশ হেফাজতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর (৬৪) মৃত্যুর ঘটনায় আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছার আদালতে মামলাটির আবেদন করেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ফৌজিয়া আনোয়ার।
এতে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল ইসলামসহ মোট ৯ জনকে আসামি করা হয়। আদালত ভুক্তভোগীর পক্ষে ও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ শুনে মামলাটি আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ তালিকায় রেখেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- চান্দগাঁও থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. ইউসুফ, এএসআই সোহেল রানা, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মবিনুল হক, চান্দগাঁও থানা এলাকার বাসিন্দা এসএম আসাদুজ্জামান (৫২), মো. জসীম উদ্দীম (৩৭), মো. লিটন (৪৮), রনি আক্তার তানিয়া (২৬) ও কলি আক্তার (১৯)।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আদালত মামলার অভিযোগ শুনেছেন। এরপর আদেশের জন্য অপেক্ষমাণ রেখেছেন।
এর আগে গত ২৯ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অবসরপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর (৬৪) বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে ৩২৩ (মারধর) ও ৫০৬ (২) (ভয়ভীতি প্রদর্শন) ধারায় মামলা করেন তানিয়া।
তানিয়ার দায়ের করা মামলায় ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও তার আত্মীয় মোহাম্মদ কায়সার আনোয়ারকে আসামি করা হয়। শহীদুল্লাহর ঘরে গৃহকর্মী ছিলেন দাবি করে তানিয়া এ মামলাটি করেন। এ মামলায় গত ২৭ সেপ্টেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা দেন সংশ্লিষ্ট আদালত।
চান্দগাঁও থানায় ডাকযোগে পরোয়ানাটি থানায় আসে গত ১ অক্টোবর। পরোয়ানা তামিল করতে থানার এএসআই ইউসুফ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। ৩ অক্টোবর রাতে ইউসুফ আলী ও আরেক এএসআই মো. সোহেল ছৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যান। পরে পুলিশ হেফাজতেই তার মৃত্যু হয়।
নিহতের পরিবার শুরু থেকে মামলাটি সম্পর্কে অবগত নয় জানিয়ে এটি সাজানো বলে দাবি করে আসছেন। সন্ত্রাসীরা চাহিদার ৫০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে মিথ্যা তথ্যে এ নারীকে বাদী সাজিয়ে ‘গায়েবি’ মামলা করেছে জানায় পরিবার।
পুলিশ হেফাজতে নিহত দুদক কর্মকর্তা সৈয়দ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন এক কিলোমিটার মহুরি বাড়ি এলাকার পৈত্রিক বাড়িতে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
তিনি সর্বশেষ চট্টগ্রামের দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২-এ উপপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সেখান থেকে ২০০৭ সালের ১২ জুলাই তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
জেএন/রাজীব