তফসিল ঘোষণার পর থেকেই এই সরকার নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আগামী মাসের (নভেম্বর) মাঝামাঝি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, যখন নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে, তখন থেকে এই সরকার নির্বাচনকালীন সরকার।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, বিএনপি-জামায়াত প্রতিবার নির্বাচন নষ্ট করার চেষ্টা করেছে।
সংবিধান অনুসারে ৩০ অক্টোবর থেকে ৩০ জানুয়ারি এই ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে হিসাবে অক্টোবরের ৩০ থেকে থেকেই কি নির্বাচনকালীন সরকার, সংবিধান কী বলে- জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পরিষ্কারভাবে বলেছি, সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকার বলে কিছু নেই। এখন কথা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালেও এটা করেছেন, তার কারণ তিনি গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এটা করেছেন। এখন তার ওপর নির্ভর করে তিনি কীভাবে নির্বাচনকালীন সরকার দেবেন, বা কী করবেন, কী করবেন না। আবার সংবিধান অনুযায়ী যদি আমরা বলি, যখন নির্বাচন কমিশন নির্বাচন ঘোষণা করবে, সেই মুহূর্ত থেকে এই সরকার নির্বাচনকালীন সরকার।’
সংবিধানে নির্বাচনকালীন সরকারের কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। কিন্তু ২০১৪ সালে মন্ত্রিসভা ছোট হয়েছিল। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনিসুল হক বলেন, ‘সেটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি সবাইকে নিয়ে একটি নির্বাচন করার চেষ্টা করছিলেন। সেই সময়ের ইতিহাস আপনারা জানেন। বিরোধীদলীয় নেতাকে প্রধানমন্ত্রী টেলিফোন করেছিলেন। কিন্তু তিনি তা ধরেননি। সে ক্ষেত্রে ২০১৮ সালেও তিনি আলোচনা করেছেন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি নির্বাচনে গেছেন। কিন্তু প্রতিবারই বিএনপি-জামায়াত নির্বাচন নষ্ট করার সব পদক্ষেপ নিয়েছে।’
‘সংবিধানে বলা আছে, নির্বাচন কখন হবে, সেই অনুসারে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। আমরা চাই, সবাই নির্বাচনে আসুক এবং নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে।
সংবিধান সংশোধনের জন্য আগামী ৩০ অক্টোবর আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমুখে ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার তাদের আছে। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে একটি বিষয় আমি পরিষ্কার বলে দিতে চাই, সেটা হচ্ছে সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাংলাদেশের সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও অবৈধ ঘোষণা করেছে। এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে সংসদ পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে। এখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারা ফিরিয়ে আনার কোনো সম্ভাবনা নেই এবং এটাকে আবার রিভিজিট করে সংবিধান সংশোধনের কোনো সম্ভাবনা নেই।
জেএন/এমআর