দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রধান দুই সেতুর চাপ কমাবে বঙ্গবন্ধু টানেল

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে নির্মিত বহুলেন সড়কের বঙ্গবন্ধু টানেলটির উদ্বোধনে যোগাযোগ ব্যবস্থায় দারুন সুফল ভোগ করবে চট্টলাবাসী।

- Advertisement -

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, চট্টগ্রাম শহরে নিরবচ্ছিন্ন ও যুগোপযোগী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং বিদ্যমান সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ‘আধুনিকায়ন’ করতে এই প্রকল্প করা হয়েছে।

- Advertisement -google news follower

এই মুহূর্তে চট্টগ্রাম থেকে আনোয়ারার তুলনামূলক ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা। একই সাথে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার এর মধ্যে নতুন সড়ক যোগাযোগের কাজে আসবে এই টানেল।

তাছাড়াও দক্ষিণ চট্টগ্রামে যাতাযাতে বিদ্যমান কর্ণফুলী নদীর উপরের প্রধান দুটি সেতুতে চাপ কমাতেও সাহায্য করবে এই টানেল।

- Advertisement -islamibank

অন্যদিকে বর্তমান কোরিয়ান ইপিজেডের সাথে চট্টগ্রাম বন্দরের যাতায়াতের তুলনামূলক সুবিধাজনক রুট হবে এই টানেল। এ ছাড়া ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ‘৫০ কিলোমিটারের মতো দূরত্ব কমবে এবং সময় বাঁচবে এক ঘণ্টার মতো’ জানান টানেল নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক মো. হারুনুর রশীদ চৌধুরী।

তবে এর কার্যকারিতার সুফল মূলত আসবে দীর্ঘমেয়াদে। যেমন ভবিষ্যতে এশিয়ান হাইওয়ের সাথে সংযোগ স্থাপন হবে এই টানেলের মধ্য দিয়ে।

প্রকল্প সাথে সম্পৃক্ত কর্মকর্তারা দাবি করছেন, এই টানেল নির্মাণের আরেকটি উদ্দেশ্য চট্টগ্রাম শহরকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ বা ‘এক নগর দুই শহর”’ এর মডেলে গড়ে তোলা।

এই যোগাযোগ ব্যবস্থা চালুর পর শহরের সম্প্রসারণ এবং বিদ্যমান শিল্প নগরীর আরও শিল্পায়ন হওয়ার চিন্তা থেকেই এমনটা বলা হচ্ছে।

কর্ণফুলী নদীর পূর্বদিকের প্রস্তাবিত শিল্প এলাকার উন্নয়নের দিক যেমন আছে, তেমন পশ্চিম দিকের শহর, বন্দর ও বিমানবন্দরের সাথে উন্নত ও সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা বলছে সেতু বিভাগ।

এ ছাড়া নদীর পূর্ব প্রান্তে ভবিষ্যতে শিল্পায়নের দিক ছাড়াও পর্যটন শিল্পের বিকাশের কথাও বলা হচ্ছে।

তবে টানেলের কার্যকারিতার বড় অংশই দুই পাশের ব্যবস্থাপনার অনেক দিকের উপর নির্ভর করবে বলে মতো পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহ সভাপতি প্রকৌশলী সুভাস বড়ুয়ার। তিনি এই টানেলসহ চট্টগ্রামের পরিবহণ ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণাধর্মী কাজ করেছেন।

তিনি বলছিলেন, মহাসড়কের অব্যবস্থাপনার যে সমস্যা রয়েছে সেটা নিয়ন্ত্রণ না হলে যে সময় বাঁচানোর কথা বলা হচ্ছে সেটা খুব বেশি কার্যকর কিছু হবে না। প্রকল্পের বাইরে উভয় দিকের রাস্তা ছোট এবং যানজটের সমস্যা প্রকট।

সুভাস বড়ুয়া উদাহরণ দেন রিকশা, টেম্পো, নছিমনের মতো কম গতির বাহন মহাসড়কে চলাচলের কারণে বিশৃঙ্খলা বা দুর্ঘটনার মতো ঘটনা ঘটে।

এমন যদি ঢাকা-কক্সবাজার রুটেও চলতে থাকে তাহলে বিভিন্ন জায়গায় ‘বটলনেক’ থাকবে যেখানে যানবাহনের গতি কমে যাবে। এতে করে শুধু টানেলের অংশ দিয়ে সময় বাঁচানো খুব বেশি কার্যকর কিছু হবে না।

‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় কোন ধরনের গাড়ি চালালে অল্প জায়গায়, অল্প সময়ে সর্বোচ্চ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে এসব বিষয় চিন্তা না করে যদি পরিকল্পনা করা হয় তাহলে এর সুফল পাওয়া যাবে না’ বলেন সুভাস বড়ুয়া।

আগামী কয়েক বছরের মধ্যেও এর পূর্ণাঙ্গ সুফল পাওয়া যাবে না বলে মনে করেন তিনি। এই মুহূর্তে শুধু ঢাকা-কক্সবাজারের সড়ক দূরত্ব কমা ছাড়া বড় কোনো বাণিজ্যিক সুবিধার দিক দেখছেন না তিনি।

তিনি আরও মনে করেন যে শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হওয়ার কথা বলা হচ্ছে সেসব সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার উপরেও এর কার্যকারিতা নির্ভর করবে।

বাণিজ্যিক সুবিধার দিকগুলো সেসব ভবিষ্যৎ উন্নয়নের উপরে নির্ভর করবে মত সুভাস বড়ুয়ার। সে সব দিক সম্ভব না হলে এটা বাংলাদেশের জন্য অনেকটা ‘বোঝা’ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

‘রিসোর্টে’র মতো সার্ভিস এরিয়া
এমন অনেক সুযোগ সুবিধা। আনোয়ারার দিকে পার্কি বিচের কাছে এর কাজ চলছে বলে জানান মিঃ চৌধুরী। এটিকে পরবর্তীতে রিসোর্ট হিসেবে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে যেটা থেকে সরকারের আয়ের উৎস হবে বলে জানান তিনি। প্রকল্পব্যয় যে ১০ হাজার কোটি ধরা হয়েছে এই অংশটি সেটার অন্তর্ভুক্ত, যদিও এর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি।

জেএন/রাজীব

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM