রাজধানী মহাখালীর খাজা টাওয়ারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ার টেক লিমিটেড।
আগুনের ঘটনায় পুড়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির অনেক প্রয়োজনীয় নথিপত্র ও দামি আসবাবপত্র। আগুনের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন সাইফের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ই-ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের প্রকল্প সমন্বয়ক প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম (৬৩)।
রফিকুল প্রতিষ্ঠানটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি রাজধানী ঢাকা মিরপুর শাহ আলীবাগের ২৫/৮/২৫/৯ নম্বর বাসায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
গত ২৬ অক্টোবর সন্ধ্যায় আগুন লাগে
রাজধানীর মহাখালীর ১৪ তলা বিশিষ্ট এ খাজা টাওয়ারে। ওই ভবনের ১৩ তলায় ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে সাইফ পাওয়ার টেকের এক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত টাওয়ারের ৩য়. ৪র্থ, ৭ম, ১২তম, ১৩তম ও ১৪ তম তলায় সাইফ পাওয়ার ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর একাধিক অফিস রয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অফিসগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। পুড়ে গেছে অনেক প্রয়োজনীয় নথিপত্র। ছাঁই হয়ে গেছে প্রতিষ্ঠানটির দামি আসবাবপত্র এবং অনেক টেকনিক্যাল জিনিস।
এছাড়া আগুন লাগার ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক আমিনুজ্জামানসহ অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছেন। আহত সবাই ঝুঁকিমুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ইতোমধ্যেই পরিচালক আমিনুজ্জামান ছাড়া বাকী সবাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।
আহত অন্যরা হলেন- সেফটি অফিসার গোলাম রাব্বানী, এজিএম নাজমুল হাসান, হিসাব বিভাগের নূর হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, প্রশাসন বিভাগের সুফী সাব্বির আহমেদ, সিনিয়র ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম, গোলাম রাব্বানী, অফিস এক্সিকিউটিভ নিজাম উদ্দিন, এইচআর এক্সিকিউটিভ কায়সার আরাফাত এবং নিরাপত্তা প্রহরী চারজন যথাক্রমে- তারিকুল, শাকিল, আনোয়ার এবং মামুন প্রমুখ।
কোম্পানির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) মো. হাসান রেজা বলেন, আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এখনো সঠিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।
সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৭ বছর ধরে দেশে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে সাইফ পাওয়ার টেক। প্রকৌশল খাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপক সুনাম রয়েছে।
তাছাড়া চট্টগ্রাম ও দুবাই বন্দরের মালামাল হ্যান্ডেলিং, নদী খনন, ব্যাটারি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, পুন. নবায়নযোগ্য জ্বালানী, এলইডি লাটিং সল্যুশন, ফার্মাসিউটিক্যালসের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনসহ নানাবিধ মৌলিক ব্যবসা রয়েছে তাদের।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ১৪ তলা এ ভবনে আগুন লাগে। পরে আগুন নেভাতে পর্যায়ক্রমে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের ১২ ইউনিট।
এছাড়া ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তা করে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যরা। এছাড়া সাত প্লাটুন আনসার সদস্য ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
এরপর প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে তার আগেই সাইফ পাওয়ার টেকের বিভিন্ন কার্যালয় ছাড়াও দেশের দুটি বৃহৎ ডাটা সেন্টার পুড়ে সারাদেশে ইন্টারনেট সার্ভিসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেএন/রাজীব