গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে ঘটা সহিংসতার জন্য বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি যে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন এসব ঘটনায় তা আবার প্রমাণ হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগদান বিষয়ে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
বিএনপির কর্মকাণ্ডকে গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতার সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী যেভাবে ফিলিস্তিনের হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, বিএনপিও সেভাবে হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি হামলার সঙ্গে তাদের কোনো তফাৎ দেখছি না।
২৮ অক্টোবরের সহিংসতার ঘটনা নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, কানাডার কোর্ট বারবার বলেছে বিএনপি-জামায়াত জোট সন্ত্রাসী জোট, তারা (বিএনপি) আবার সেটি প্রমাণ করলো। মাঝে কিছুটা রাজনৈতিক কর্মসূচি তারা পালন করেছে। আমাদের সরকারও কোনো বাধা দেয়নি। ধীরে ধীরে আস্থা অর্জন শুরু করেছিল। তবে ২৮ তারিখের ঘটনায় ধিক্কার ছাড়া আর কিছুই তাদের জুটবে না।
বিএনপির ডাকা তিনদিনের অবরোধ প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, কিসের অবরোধ, কার জন্য অবরোধ। যখন দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, সারা বিশ্ব প্রশংসা করছে, তাদের কাজটাই হলো উন্নয়ন নস্যাৎ করা।
প্রসঙ্গত, গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশ নিতে গত ২৪ অক্টোবর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বেলজিয়ামে যান প্রধানমন্ত্রী। গত ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওই ফোরামে যোগ দেন তিনি। ফোরামের ফাঁকে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করেন। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্র ও লুক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।
সফরকালে ২৫ অক্টোবর ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন, নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। এসব বৈঠকের পর বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংকের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ৩৫ কোটি ইউরোর একটি ঋণ সহায়তা, সাড়ে ৪ কোটি ইউরোর একটি অনুদান এবং একই খাতে বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোর অনুদান চুক্তি সই হয়।
এছাড়া সামাজিক খাতের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও ইউরোপীয় কমিশনের মধ্যে ৭ কোটি ইউরোর আরও পাঁচটি অনুদান চুক্তি হয়। ২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানেও যোগ দেন তিনি। দুদিনের সফর শেষে ২৭ অক্টোবর দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।
জেএন/এমআর