শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জোরদার করল নিউজিল্যান্ড।
চলমান আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে গতবারের ফাইনালিস্টরা। ১৭২ রানের লক্ষ্য ১৬০ বল হাতে রেখেই পূরণ করে কেন উইলিয়ামসনের দল।
এ নিয়ে ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে কিউইদের পয়েন্ট হলো ১০। দশ দলের তালিকায় তাদের অবস্থান চারে। এক ম্যাচ কম খেলে শেষ চারের দৌঁড়ে রয়েছে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানও। দুই দলেরই পয়েন্ট ৮ করে।
দুটি দলের হতেই রয়েছে একটি করে ম্যাচ। দুটি দলই নিজ নিজ খেলায় জয় পেলে চলে আসবে নেট রান রেটের হিসাব। যেখানে ভালো অবস্থানে আছে নিউজিল্যান্ড (০.৭৪৩)।
সেমিফাইনালে যেতে নিজেদের শেষ ম্যাচে শুধু জিতলেই হবে না, নিউজিল্যান্ডকে টপকে যেতে পাকিস্তান (০.০৩৬) ও আফগানিস্তানকে (-০.৩৩৮)। সে কাজটি করতে হবে প্রায় অসম্ভব এক ব্যবধানে।
টুর্নামেন্টের শেষ চার আগেই নিশ্চিত হয়েছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়ার। খুব অবিশ্বাস্য কিছু না হলে তাদের সাথে তাই সেমিফাইনালে খেলবে নিউজিল্যান্ডই।
এই হারে ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনাও শেষ হয়ে গেল শ্রীলঙ্কার। ৯ ম্যাচ শেষে ২ জয়ে তাদের পয়েন্ট ৪। দশ দলের তালিকায় তারা আছে নয়ে। তালিকার সেরা আটে থাকা দলগুলো নিয়ে হবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। লঙ্কানদের হারে টুর্নামেন্টটিতে খেলার সম্ভাবনা জোরদার হলো বাংলাদেশের।
৩৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট। লক্ষ্য তাড়ায় তিনটি চল্লিশোর্ধো ইনিংস খেলেন ডেভন কনওয়ে, রাচিন রবীন্দ্র ও ড্যারেল মিচেল। ৮৬ রানের ঝড়ো শুরুর পর তাদের আর পেছনে ফিরে তাঁকাতে হয়নি।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলে কুসল মেন্ডিসকে ক্যাচ আউটে পরিণত করেন বোল্ট। এর মাধ্যমে নিউজিল্যান্ডের প্রথম আর সব মিলিয়ে ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে ৫০ উইকেট শিকারের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই বাঁহাতি পেসার।
একই ওভারে সাদিরা সামারাবিক্রমাকেও শিকারে পরিণত করে স্পর্শ করেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৬০০ উইকেটের মাইলফলক। নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় বোলার হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন বোল্ট। সব মিলিয়ে ম্যাচে তার শিকার ৩৭ রানে ৩টি।
বোল্টের সতীর্থ টিম সাউদির মোট আন্তর্জাতিক উইকেট ৭৩২টি। দলটির সাবেক স্পিনার ডেনিয়েল ভেট্টরির উইকেট ৭০৫টি।
১০ ওভারে স্রেফ ২২ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়ে দারুণ রেকর্ড স্পর্শ করেন মিচেল স্যন্টনারও বিশ্বকাপের এক আসরে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি স্পিনার এখন যৌথভাবে তিনিই। এ নিয়ে আসরে তার উইকেট ১৬টি। ২০০৭ আসরে ১৬ উইকেট নিয়েছিলেন ভেট্টরি। দল সেমিফাইনালে উঠলে ভেট্টরিকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ পাবেন স্যান্টনার।
২৩.৩ ওভারে ১১৩ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর কিউইদের অপেক্ষা বাড়ান থিকশানা। এই স্পিনিং অলরাউন্ডার ৯১ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ ব্যাটার দিলশান মাদুশানকা করেন ৪৮ বলে ১৯ রান।
লঙ্কানদের ইনিংসে ফিফটি জুটি নেই একটিও। ত্রিশোর্ধো জুটি তিনটি। বিশোর্ধো ইনিংস খেলতে পারেন কেবল কুসল পেরেরা ও থিকশানা। শূন্য রানে জীবন পেয়ে পেরেরা আউট হন ২৮ বলে ২ ছক্কা ও ৯ চারে ৫১ রান করে। ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি ২২ বলে। বিশ্বকাপে যা শ্রীলঙ্কার হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম। ২০১৫ আসরে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ২০ বলে ফিফটি করেছিলেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস।
শ্রীলঙ্কা: ৪৬.৪ ওভারে ১৭১ (নিশানকা ২, পেরেরা ৫১, মেন্ডিস ৬, সাদিরা ১, আসালাঙ্কা ৮, ম্যাথিউস ১৬, ধনাঞ্জয়া ১৯, করুনারত্নে ৬, থিকশানা ৩৯*, চামিরা ১, মাদুশানকা ১৯; অতিরিক্ত ৩; বোল্ট ১০-৩-৩৭-৩, সাউদি ৮-০-৫২-১, ফার্গুসন ১০-২-৩৫-২, স্যান্টনার ১০-২-২২-২, রবীন্দ্র ৭.৪-০-২১-২)।
নিউজিল্যান্ড: ২৩.২ ওভারে ১৭২/৫ (কনওয়ে ৪৫, রবীন্দ্র ৪২, উইলিয়ামস ১৪, মিচেল ৪৩, চাপম্যান ৭, ফিল্পিস ১৭*, ল্যাথাম ২*; অতিরিক্ত ২; মাদুশানকা ৬.২-০-৫৮-০, থিকশানা ৭-০-৪৩-১, ধনাঞ্জয়া ২-০-২২-০, চামিরা ৪-১-২০-১, ম্যাথিউস ৪-০-২৯-২)।
ফল: নিউজিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দা ম্যাচ: ট্রেন্ট বোল্ট।
জেএন/আর এস