মাত্র ৬২ হাজার ডিম আমদানিতে ভেঙে দিলো দেশীয় সিন্ডিকেট! এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি পিসের পাইকারি দর কমেছে ৪ টাকা। অথচ টানা কয়েক মাস ধরে রেকর্ড দামে কিনতে হয়েছে ভোক্তাদের।
কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) ক্যাব মনে করছে, এই সুযোগে ভোক্তাদের পকেট থেকে অন্তত হাজার কোটি টাকা লুটে নিয়েছে সিন্ডিকেট চক্র। এসময় আইন প্রয়োগে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান সংগঠনের সভাপতি ড. গোলাম রহমান।
গেল কয়েক মাস ধরেই ডিমের বাজারে অস্থিরতা, দাম নিয়ে অস্বস্তিতেও ক্রেতারা। অবশেষে ডিম আমদানির সিদ্ধান্ত আর তাতেই স্বস্তি। কমতে শুরু করেছে ডিমের দাম।
শনিবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়। পাইকারির বাজারে যা আরও কম, ৮ টাকার মতো। বিক্রেতারা বলছেন, গেলো ৫ নভেম্বর বাজারে আসে ভারতীয় ডিম। এরপর থেকেই দামের এই ধারাবাহিক পতন।
এক বিক্রেতা বলেন, আগে ১০০০ ডিম পাওয়া যেতো না। এখন আবার অভাব নেই। আরেক বিক্রেতা বলেন, ১০০ লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ টাকায়। আর সাদা ডিম ৮৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এক ক্রেতা বলেন, সিন্ডিকেট আবার ডিমের দাম বাড়াবে। এটা শেষ হলেই আগের দরে ফিরে যাবে তারা। আমার অনুরোধ যাতে আর মূল্য না বাড়ে। আরেক ক্রেতা বলেন, ভারত থেকে ডিম এসেছে, তাই দরপতন হয়েছে। সেটা বন্ধ হয়ে গেলে আবার দর বেড়ে যাবে।
এখন পর্যন্ত অনুমোদন মিলেছে ২০ কোটি ডিম আমদানির। বিপরীতে দেশে এসেছে মাত্র ৬২ হাজার। তাতেই দুশ্চিন্তার ভাঁজ সিন্ডিকেটের কপালে।
আমদানিকারকরা বলছেন, নানা কারণে আমদানি প্রক্রিয়া বিলম্বিত হলেও কেটেছে সেই সঙ্কট।
ডিম আমদানিকারক দিপংকর সরকার বলেন, ডিম আসতে শুরু করেছে। সিন্ডিকেট তা দেখছে। তারা বুঝে গেছে, ডিম আসতে কোনও বাধা নেই। ফলে আর দাম বাড়াবে বলে মনে হয় না।
বর্তমানে দেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি। গেলো মাস তিনেক ধরে প্রতি পিস গড়ে পাইকারিতে বিক্রি হয়েছে ১১টাকায়। বর্তমানে যা নেমেছে ৮-এর ঘরে। ফলে প্রতি ডিমে অন্তত ৩ টাকা বেশি নেয়ায় এই ৩ মাসে জনগণের পকেট থেকে লুট হয়েছে অন্তত হাজার কোটি টাকা।
ক্যাবের সভাপতি ড. গোলাম রহমান মনে করছেন, সিন্ডিকেট ভাঙতে শুধু ডিম নয়, যেকোনো পণ্যের আমদানি উন্মুক্ত রাখা উচিত।
তিনি বলেন, সিন্ডিকেট ভয় পেয়েছে। তারা মনে করছে, ডিমের আমদানি উন্মুক্ত রাখলে আর দাম বাড়ানো যাবে না। শুধু ডিম নয়, অন্যান্য পণ্যের আমদানিও উন্মুক্ত রাখা উচিত।
এদিকে আমদানি শুরু হলেও, প্রভাব নেই আলুর বাজারে।