২০১৮-১৯ অর্থবছরে লবণ উৎপাদনের মওসুমে নতুন লবণ ওঠা শুরু হয়েছে। নভেম্বরে মাঠ তৈরির কাজ শুরু হলেও খালে ছিল না লবণাক্ত পানি। অনেক চাষি গভীর নলকূপ বসিয়ে লবণাক্ত পানি উঠিয়েছে। ফলে আগাম লবণ তুলেছে ওই চাষিরা। একমাস আগেই চাষিরা মাঠ তৈরির কাজ শুরু করলেও, এখনো অধিকাংশ মাঠ তৈরির কাজ শেষ হয়নি।
সূত্র মতে, উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৬ হাজার ৭শ’ ৯৮ একর জমিতে লবণ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া লেমশীখালীতে লবণ প্রদর্শনী কেন্দ্রে (বিসিক) রয়েছে ৭৯ একর লবণ মাঠ। বিগত কয়েক বছর লবণের বাম্পার ফলন এবং দামও বেশ ভালো থাকায় জমির লাগিয়ত মূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। তবে এবার লবণের দাম পড়তি হওয়ায় জমির দাম কিছু কমে গেছে।
প্রতি একর জমি একসনা ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাগিয়ত নেওয়া হয়। আবহাওয়া ভালো হলে প্রতি একরে ৭০০ মণ সাদা লবণ উৎপাদন হয়।
জানা গেছে, লেমশীখালী, দক্ষিণ ধুরুং, কৈয়ারবিলের বেশ কয়েকটি মাঠে নতুন লবণ দেখা যাচ্ছে।
দক্ষিণ ধুরুংয়ের লবণ চাষি জয়নাল আবেদীন জানান, মাঠ তৈরির কাজ আগে শুরু করলেও খালে মিঠা পানি প্রবেশ করায় তা লবণ মাঠে ব্যবহার সম্ভব হয়নি।
জানালেন, এবার তিনি মাঠে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে গভীর নলকূপ বসিয়েছেন। অন্তত ৩০০ ফুট নিচ থেকে তোলা পানিতে লবণাক্ততা মিলেছে। ফলে দ্রুত লবণ উঠছে মাঠে। তার উৎসাহে আগাম লবণ চাষে অনেকেই মাঠে গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে।
তিনি আরো জানান, মাঠে নতুন লবণ প্রতিমণ ২০০ টাকায় দর-দাম হচ্ছে। পুরাতন লবণ ৩০০ টাকা। তবে উৎপাদিত লবণের দাম ৩০০ টাকা না হলে খরচ তোলা সম্ভব হবে না।
কৈয়ারবিলের চাষি জাকের হোছাইন জানান, গত বছর লবণ উৎপাদন ভালো ছিল। প্রথমদিকে দাম ভালো থাকলেও শেষের দিকে দাম পড়ে যায়। এছাড়া বিদেশ থেকে লবণ আমদানির গুজবেও লবণ ব্যবসায়ীরা মাঠপর্যায়ে দাম কমিয়ে দেয়। কষ্ট করে উৎপাদিত লবণ ন্যায্য দামে বিক্রি করতে না পারলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তিনি মনে করেন।
লেমশীখালীর চাষি আব্দুছ ছালাম বলেন, মাঠে নতুন লবণ উঠছে। বিক্রি শুরু করেননি এখনো। দাম কম বলছে লবণ ব্যবসায়ী ও বোট মালিকরা। আশায় আছেন দাম বাড়ার।
নতুন লবণের দাম না বাড়লে চাষিদের পরিশ্রম বিফলে যাবে বলে তিনি মনে করেন। তাছাড়া চাষিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।