অপরাধ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে না এলে ক্রসফায়ারে দেওয়া হবে বলে ‘হুমকী’ দিয়েছেন কুতুবদিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ও ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলাম! এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ তিনি কুতুবদিয়ার পাড়া-মহল্লার সর্বত্র বিলি করেছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।
নুরুল ইসলাম কুতুবদিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ছাড়াও লেমশীখালী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য। শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) তাঁর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যে সব পরিবারের ছেলেরা ডাকাতি ও রাষ্ট্রদ্রোহমূলক কার্যকলাপে জড়িত তারা যদি চলতি বছরের ২৪-২৫ নভেম্বরের মধ্যে র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে আত্মসর্মপণ না করে তাহলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে গ্রেফতারপূর্বক ক্রসফায়ার দেওয়া হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পাড়া, মহল্লা, সমাজ ও এলাকায় যদি কেউ ডাকাতি বা রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপে জড়িত থাকে, তাহলে আত্মসমর্পণের জন্য তারা যেন তাঁর (নুরুল ইসলাম) সঙ্গে যোগাযোগ করে। যদি আত্মসমর্পণ করে তাহলে তাদের সরকার কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ও পুনর্বাসন করা হবে।
এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার রায় বলেন, ‘বিষয়টি সবেমাত্র শুনেছি। এ ধরনের নোটিশ জারি করার এখতিয়ার তাঁর নেই। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ওসিকে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে।’
নুরুল ইসলামের এমন কর্মকাণ্ডে চরম বিব্রত স্থানীয় শ্রমিক লীগের নেতা-কর্মীরা। কুতুবদিয়া উপজেলা শ্রমিক লীগের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম সিকদার রাসেল বলেন, ‘শুনেছি তিনি (নুরুল ইসলাম) নাকি সন্ত্রাসীদের আত্মসমর্পণ করার জন্য আহ্বান জানিয়ে নোটিশ জারি করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে এটা করার এখতিয়ার তাঁর নেই। কিভাবে এই ধরনের একটি নোটিশ দিয়েছে, সেটা বোধগম্য নয়। এটা নিয়ে আমরা বিব্রত।’
তিনি আরও বলেন, ‘নোটিশের বিষয়টি শোনার পর তাঁর সঙ্গে একবার যোগাযোগ হয়েছে। কিন্তু কোন সদুত্তর না দিয়েই ফোন কেটে দেন তিনি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনচারী বলেন, নুরুল ইসলাম শ্রমিক লীগের সভাপতি ছাড়াও স্থানীয় লেমশীখালী ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার। তাঁর এলাকা সন্ত্রাসমুক্ত করার জন্য এটা করে থাকতে পারে। কিন্তু এভাবে নোটিশ দেওয়ার অধিকার তাঁর নেই। দল থেকেও এই ধরনের কোন নির্দেশনা নেই। খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।