বাঁশখালীতে এক সমাপনী পরীক্ষার্থী (১২) পরীক্ষার হলেই কন্যা সন্তান প্রসব করেছে। রোববার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলা সদরের বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
সে পূর্ব জলদী আদর্শ গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং উত্তর জলদী নতুন দিঘীর পাড় এলাকার এক পানের দোকানদারের মেয়ে। ১০ মাস আগে স্কুল থেকে দুপুরের ছুটিতে বাড়িতে ভাত খেতে যাওয়ার সময় স্থানীয় নেজাম উদ্দিন তাঁর দুই সঙ্গীকে নিয়ে পাশের এক পাহাড়ে নিয়ে হাত পা বেঁধে মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে। তবে লজ্জায় বাড়িতে ওই ঘটনার কথা জানায়নি মেয়েটি।
রোববার পরীক্ষা কেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা দিতে বসে পরীক্ষার হলেই সন্তান প্রসব করলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়। বাঁশখালী হাসপাতালের নার্সরা খবর পেয়ে দ্রুত নবজাতক ও শিশু মা-কে হাসপাতালে ভর্তি করান।
তিন ধর্ষকের একজন নেজাম উদ্দিন বাঁশখালী হাসপাতালে এসে স্বেচ্ছায় ধর্ষণের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে সবাইকে জানাতে থাকলে থানা পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। নেজাম উদ্দিন ওই ছাত্রীর দূর সর্ম্পকের চাচা হন। তিনি দুই সন্তানের বাবা।
বাঁশখালী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার শ্রীধর গুহ বলেন, ছাত্রী পরীক্ষার খাতা ও গণিত প্রশ্ন পেয়ে অংক শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থতার কারণে পরীক্ষার হলে লুটিয়ে পড়ে। সেখানেই তার সন্তান প্রসব হয়।
বাঁশখালী উপজেলা হাসপাতালের গাইনী বিভাগের প্রধান নাহিদা বেগম মজুমদার বলেন, প্রসব হওয়া কন্যা সন্তানের ওজন ৩ কেজি। মা ও শিশু দুইজনই সুস্থ আছে।
ওই ছাত্রীর মা বলেন, ‘মেয়ের এ দূরবস্থার কথা আমরা জানতাম না। আমরা গরীব মানুষ। আজকে সন্তান প্রসব করে মেয়েটি আমাকে ১০ মাস আগে গণধর্ষণের ঘটনা খুলে বলেছে।’
ছাত্রীটি হাসপাতাল বেডে শুয়ে জয়নিউজকে জানায়, ‘১০ মাস আগে আমি স্কুল থেকে দুপুরের ছুটিতে ভাত খেতে যাওয়ার সময় নেজাম উদ্দিন, মান্নান ও সোনা মিয়া আমাকে জোর করে পাহাড়ে ধরে নিয়ে যায়। ওখানে হাত পা বেঁধে তারা ধর্ষণ করে। আমি লজ্জায় ঘটনাটি খুলে বলিনি। এমন ঘটনা হবে তা বুঝতে পারিনি।
বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, এক ধর্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হবে। অন্য দোষীদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।
জয়নিউজ/উজ্জ্বল/জুলফিকার