প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানে হারিয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের কৃতিত্ব দেখালো বাংলাদেশ। এর আগে গত বছর জানুয়ারিতে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে নিউজিল্যান্ডকে টেস্টে হারিয়েছিলো টাইগাররা।
পঞ্চম দিন প্রয়োজন ছিল মাত্র ৩ উইকেট।আজ সকালে সিলেটের লাক্কাতুরায় অবস্থিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ আসতে খুব বেশি সময় লাগলো না।
প্রথমে বড় বাধা হয়ে থাকা ড্যারিল মিচেলকে ফেরালেন নাইম হাসান। এরপর টিম সাউদিকে ফিরিয়ে ৫ উইকেট পূরণ করেন তাইজুল ইসলাম।
শেষ উইকেট হিসেবে ইশ সোধিকে ফিরিয়ে দিয়ে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ১৫০ রানের ব্যবধানে হারানোর ঐতিহাসিক ক্ষণের জন্ম দিলো বাংলাদেশ।
এই জয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা বাংলাদেশ ১২ পয়েন্ট দিয়ে যাত্রা শুরু করল।
৩৩২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে গতকাল ১১৩ রান তুলতে ৭ উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। আজ শেষ দিনে হাতে থাকা ৩ উইকেটে তাদের প্রয়োজন ছিল ২১৯ রান। মিচেল ৪৪ ও ইশ সোধি ৭ রানে দিন শুরু করেন।
তবে সুবিধা করতে পারেননি। আগের দিনের সঙ্গে ৬৮ রান যোগ করে বাকি ৩ উইকেট হারায় কিউইরা। এতে গুটিয়ে যায় ১৮১ রানে। ১৫০ রানের জয় পায় বাংলাদেশ। যা প্রথমবার ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট জয় টাইগারদের।
এমন জয়ে উজ্জ্বল তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নেয়া এই বাঁহাতি দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৬ উইকেট। সব মিলিয়ে ১০ উইকেট এই বাঁহাতি স্পিনারের।
এর আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ হেরেছিল ১৩ টেস্টে। ৩টি টেস্ট ড্র হয়েছিল। সিলেটের এই টেস্টে জিততে হলে ইতিহাসই গড়তে হতো কিউইদের।
নিজেদের ইতিহাসে তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড পাকিস্তানের বিপক্ষে, ক্রাইস্টচার্চে। ৩২৪ রান তাড়া করে তারা ১৯৯৪ সালে জিতেছিল। এই ম্যাচে তাদের সামনে বাংলাদেশের দেওয়া লক্ষ্য ছিল ৩৩২ রানের।
জয়ের দৃশ্যপটটা বাংলাদেশ চতুর্থ দিনেই তৈরি করে রেখেছিল। যদিও ম্যাচের আগে অনিশ্চয়তা ছিল পঞ্চম দিন পর্যন্ত খেলা গড়াবে কি না। দুই ইনিংসেই কিউইদের পরীক্ষায় নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।
স্পিনবান্ধব হয়ে পড়া উইকেটে চতুর্থ দিন তার ঘূর্ণিতে ১১৩ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা।
আজ (শনিবার) প্রথম টেস্টের শেষ দিনে নেমেই ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন আগেরদিন ৪৪ রানে অপরাজিত থাকা ড্যারিল মিচেল। অবশ্য এরপর তিনি আর চোখ রাঙাতে পারেননি সেভাবে।
মিচেলের বিদায়ের পর বাংলাদেশের জয়ের অপেক্ষা বাড়িয়েছেন কিউই অধিনায়ক টিম সাউদি। তবে সেই দৌড় তাদের বেশিদূর নিয়ে যেতে পারেনি। ব্যক্তিগত ফাইফারে (৫ উইকেট) তাইজুল কিউইদের গুড়িয়ে দিয়েছেন ১৮১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে তাদের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৮ রান করেছেন মিচেল।
বাংলাদেশের হয়ে তাইজুলের ৬টি ছাড়াও নাঈম হাসান ২টি, মেহেদি মিরাজ ও শরিফুল একটি করে শিকার ধরেন।
জেএন/রাজীব