আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এলেও নির্বাচন একতরফা হবে না। লড়াই হবে ২৯ দলের মধ্যে। রোববার (৩ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিতে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জনসমর্থনের অভাবে বিএনপির আন্দোলন মুখ থুবড়ে পড়েছে। অগ্নিসন্ত্রাস ,চোরাগোপ্তা হামলা, নাশকতা করছে। স্বাভাবিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে রাজনীতিকে সন্ত্রাসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে বিএনপি। ২০১৪-১৫ এর অপকর্ম শুরু করেছে। পার্ক করা গাড়িতে আগুন দিয়েছে, গাড়ি ড্রাইভার-হেলপার মরে গেছে।
বিএনপি রাজনীতিতে ব্যর্থ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, গণবিরোধী রাজনীতিকে সমর্থন না দিলে, বিএনপি জনগণকে শত্রু ভাবে। তাদের নৃশংসতার নির্মম শিকার বেলাল হোসেন। নির্বাচন এলেই কিছু মানুষ ও গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় এই গোষ্ঠী পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করে। দেশে এখন সে চেষ্টাই করছে। লন্ডনে বসে দেশের ক্ষতি করার ফরমায়েশ দিচ্ছে। নির্বাচন যেন না হতে পারে সেজন্য ষড়যন্ত্র করে।
তিনি বলেন, এক নেতা সকালে কুয়াশার মধ্যে ১০ থেকে ১২ জন লোক নিয়ে ঝটিকা মিছিল করে। এটা কি আন্দোলন? এতে কি জনসমর্থন আছে? ভাড়া, টোকাই দিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা, পেট্রোল বোমা, ককটেল নিক্ষেপ করেছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এই নেতিবাচক অবস্থা থেকে অনেক নেতা বেরিয়ে আসতে চায়। সেজন্য বেরিয়ে এসে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। অনেকের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে। অনেকেই নেতিবাচক রাজনীতিতে জড়িয়ে রাজনৈতিক জীবন ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় না। যারা বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করে সুস্থ ধারায় ফিরে আসতে শুরু করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই।
এ সময় সামনে বিএনপির আরও অনেক নেতাকর্মী রাজনীতির সুস্থ ধারায় ফিরে আসবে বলেও প্রত্যাশা করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ২৮টি নিবন্ধিত দল নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। বিএনপি একটি দল। তাদের ভুলের রাজনীতির কারণে অনেক দল তাদের দল থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। বিএনপি একটি দল নির্বাচনে না আসলে নির্বাচন অশুদ্ধ হয়ে যাবে না। বিএনপি ভুয়া আন্দোলনে অনেকে বিভ্রান্ত হয়েছে।
কাদের বলেন, এদের বুকে সাহস নেই। তারেক রহমানকে বলবো, এটা রাজনীতি নয়। সৎ সাহস থাকলে দেশে এসে রাজপথে মোকাবিলা করেন। লন্ডনে বসে ভুলের রাজনীতির কারণে বিএনপি অনেক নেতাকর্মীকে হারাবে।
তিনি বলেন, নেত্রীর একক চেষ্টায় নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। ওসি, ডিসি, ইউএনও ট্রান্সফার ইসি করছে। এগুলো সরকার করছে না। আওয়ামী লীগ সাধুবাদ জানায়।
ইসির নিবন্ধিত ৪৪টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ২৯টি দল ভোটে এসেছে বলে জানিয়ে গতকাল শনিবার (২ ডিসেম্বর) নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেছিলেন, আগামী ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে মোট ২ হাজার ৭১৩ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে ২৯ দল থেকে প্রার্থী হয়েছেন ১৯৬৫ জন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ৭৪৭ জন।
আগামী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রার্থীদের তালিকা যাচাইবাছাই করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) এবং তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল করতে পারবেন।
দল ও প্রার্থীর সংখ্যায় গড়বড়ের ব্যাখ্যা দিয়ে অশোক দেবনাথ বলেন, মাঠ পর্যায়ের পাঠানোর তথ্যে করণিক ত্রুটির কারণে সংখ্যা এদিক-ওদিক হয়।
জেএন/পিআর