গলব্লাডার ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও পুলিশের সাবেক আইজিপি নুরুল আনোয়ার।
আজ রবিবার (১০ ডিসেম্বর) ভোর চারটার সময় রাজধানী ঢাকার গ্রীনরোডস্থ ল্যাবএইড ক্যান্সার হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র, এক কন্যা, প্রিয় স্বজন ও শুভাকাঙ্খী রেখে গেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আনোয়ার ১৯৫০ সালের ৩১ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার বাড়বকুণ্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা বাংলাদেশ রেলওয়ের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ছিলেন।
তিনি ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (পুলিশ) ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।
চাকুরী জীবনে তিনি তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমার সর্বশেষ মহকুমা পুলিশ প্রশাসক ছিলেন। তাছাড়া, তিনি চুয়াডাঙ্গা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া, রাঙামাটিসহ ৫টি জেলায় পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তর বিভাগের প্রথম উপকমিশনার ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার হিসেবে ১৯৯০ সালে পাকুন্দিয়াতে কথিত পীর মতিউরের সন্ত্রাসী আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশে সর্বপ্রথম সন্ত্রাসী জঙ্গী দমনের নেতৃত্ব দেন।
নুরুল আনোয়ার মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ ভক্ত হওয়ার কারণে ২০০৩ সালে ডিআইজি পদোন্নতির মাত্র একদিন পূর্বে তৎকালীন বিএনপি সরকার তাঁকে চাকুরী থেকে অপসারণ করে। পরবর্তীতে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল রায়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে চাকরি ফিরে পেয়ে ডিআইজি পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত হন।
২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করলে পিআরএল থাকা অবস্থায় নুরুল আনোয়ারকে পরবর্তীতে ভূতাপেক্ষ ভাবে পুলিশের সর্বোচ্চ পদ-আইজিপি পদে পদোন্নতি করেন।
অবসরকালে তিনি দৈনিক “কালের কন্ঠ” সহ বিভিন্ন পত্রিকার একজন নিয়মিত কলামিস্ট ছিলেন। পত্রিকার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে নিরাপত্তা বিশ্লেষক হিসেবে নিয়মিত টক শোতে অংশগ্রহণ করতেন।
তিনি একজন লেখক সমাজ, প্রশাসন ও ইতিহাস বিষয়ে তাঁর লেখা অনেকগুলো বই প্রকাশিত হয়।
জেএন/রাজীব