আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি লুটপাটের দল। হাওয়া ভবন হয়েছে লুটপাটের জন্য। যারা নিজেরা লুটপাট করে অন্যদের কিভাবে বলে? তারা আন্দোলনের পথ হারিয়ে পথ হারা পথিকের মতো। কখন যে কি বলে, কি করে তাদের কথায় জনগণ কান দেয় না।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাজনীতি ও সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করতে বিএনপি লিফলেট দিচ্ছে এবং ভোটারদের অনুৎসাহিত করছে, ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। জনসমর্থন না থাকায় বিএনপির আন্দোলনে মরিচা ধরে গেছে। জনসমর্থন থাকলে সরকার উৎখাত করতে কোনো দলকে চোরাগোপ্তা হামলা করতে হত না।
নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনার বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, এটি স্বাভাবিক। কোনো প্রার্থীই নির্বাচন বয়কট করবে না। এবারের নির্বাচনে কনভেন্স করে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনতে চাই।
সম্প্রতি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের হলফনামা থেকে তথ্য নিয়ে তাদের সম্পদ বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এতে দেখা গেছে কারো কারো সম্পদ কয়েকশ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ওবায়দুল কাদের বলেন, কারো আয় অস্বাভাবিক বেড়ে গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ মুহূর্তে ব্যবস্থা না নিতে পারলেও নির্বাচনে পরে ঠিকই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রার্থীদের নিয়ে টিআইবির রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, সামগ্রিকভাবে দেশের আয় বেড়েছে। গত ১৫ বছরে বাজেট বেড়েছে ১২ গুণ, মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৫ গুণ। বাংলাদেশ এখন ৩৩তম অর্থনীতির দেশ। মানুষের আয় তো বাড়ে।
প্রার্থীদের আয় ২১শ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে অনেকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি এভাবে প্রার্থীর সম্পর্কে বলতে চাই না। কিছু বলার থাকলে পরবর্তীতে কোনো ফোরামে সুযোগ হলে অবশ্যই বলবো।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছিল যারা নির্বাচনে বাধা দেবে তাদের স্যাংশন দেবে। এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সুস্পষ্টভাবে কথা বলেছে এখন এ প্রশ্নটা তাদেরকেই করা উচিৎ। এ প্রশ্নের জবাব আমার দেওয়ার কিছু নেই। সেটার জবাবে তারা কোন কৌশল অবলম্বন করেছে জানিনা। আমরা ফ্রি এন্ড ফেয়ার, পিচফুল, ক্রেডিবল ইলেকশন চাই।
নির্বাচনে ভোটার টানা হবে বারবার বলছেন, আসলে আপনারা কী কৌশল অবলম্বন করছেন ভোটার আনতে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে কোনো জবরদস্তি নেই। কৌশলটা মানুষকে বুঝানো যে আপনাদের ভোট কেন্দ্রে আসা প্রয়োজন এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করা প্রয়োজন।
দেশের পরিস্থিতিতে জনগণই অসহযোগিতা করা বা এ জনসমর্থনের অভাবে বিএনপি আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে। জনসমর্থন ছিলনা বলেই তারা তাদের আন্দোলনকে আর টেনে নিয়ে যেতে পারেনি।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ২৮ অক্টোবরে নগ্ন নৃশংসতা প্রদর্শন করে জনগণ বিএনপি থেকে আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মানুষ তাদের কোনো কর্মসূচি বিশ্বাস করেনা৷ হরতালে না, অবরোধে না, এইসব কর্মসূচি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। প্রত্যাখ্যান করেছে বলেই জনসমর্থণের অভাবে তারা সন্ত্রাসের দিকে ঝুঁকে পড়েছে এবং তারা আগুন সন্ত্রাস করছে।
অনেক স্থানে নৌকার প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ওপর হামলা করছে সে ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা যদি নির্বাচন বয়কট করে আওয়ামী লীগের প্রতিক্রিয়া কি হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী, নৌকার প্রার্থী কেউ বয়কট করবে না। ইলেকশনে এমন বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে, সেজন্য বয়কট করতে হবে না।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, শাখাওয়াত হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য শাহাবুদ্দিন ফরায়জী প্রমুখ।
জেএন/পিআর