বিশ্বব্যাপী উচ্ছ্বসিত ও উৎসুক মানুষ আজ রোববার (৩১ ডিসেম্বর) মধ্যরাতে সবচেয়ে উষ্ণতম বছর ২০২৩ কে বিদায় জানাবে।
গত ১২ মাস বিশ্ববাসী জর্জরিত হয়েছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় বর্বরোচিত হামলা এবং ইউক্রেনে চলমান তুমুল সহিংসতা, বিতর্কিত ও চতুর চ্যাটবট ও তীব্র জলবায়ু সংকটের মধ্যে দিয়ে।
বিশ্বের ৮০০ কোটির বেশি বাসিন্দা পুরাতন বছরকে বিদায় জানাবে এবং নতুন বছরকে স্বাগত জানাবে। এদের অনেকেই নতুন বছরে জীবনযাত্রার উচ্চ ব্যয় এবং সংঘাতময় বিশ্ব থেকে বাঁচার প্রার্থনা করবে।
ইংরেজি নববর্ষের রাজধানী হিসেবে পরিচিত ও স্ব-ঘোষিত সিডনির উপকূলে জড়ো হবে ১০ লাখেরও বেশি উৎসুক জনতা। বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে বিভিন্ন নৈশক্লাব ও উপকূলে দেখা যাবে উপচে পড়া ভিড়।
প্যারিসে আট মেট্রিক টনের বেশি আতশবাজি নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে আলো ছড়াবে। দেশটির আগামী বছরের নির্বাচনের ফল বিশ্বের অর্ধেকের বেশি মানুষকে প্রভাবিত করবে। সেই সঙ্গে প্যারিসে উদযাপিত হবে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিয়াড।
গত ১২ মাস বিশ্বের মানুষ সাক্ষী হয়েছে বিভিন্ন ধরনের ‘বারবিগেডনের’ যে সফলতার পেছনে ছিল মানুষের মস্তিষ্কের মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রয়োগ। সেই সঙ্গে বিশ্ববাসী প্রথমবারের মতো গোটা চোখ প্রতিস্থাপনের মতো বিরল সফলতার সাক্ষী হয়েছে।
ভারত প্রথমবারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ চীনকে ছাপিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে চাঁদের অন্ধকারময় পৃষ্ঠে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মহাকাশযান অবতরণ করতে সফল হয়েছে নয়াদিল্লি।
১৮৮০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত উষ্ণতম বছরের রেকর্ড গড়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে হর্ন অফ আফ্রিকা এবং আমাজন অববাহিকা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের আক্রমণ এবং এর জেরে ইসরায়েলের ভয়াবহ ও বর্বরোচিত হামলার জন্যে কলঙ্কিত হয়ে থাকবে বছরটি।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের সর্বাত্মক অবরোধ ও হামলা থেকে প্রাণে বাঁচতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ লাখ গাজাবাসী। যা উপত্যকাটির মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশের বেশি।
গাজা সিটিসহ এর আশপাশের এলাকাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় নতুন বছর উদযাপন করার জন্য সেখানে আগ্রহী মানুষ বা অক্ষত স্থান বলে আর কিছুই বাকি নেই। আবেদ আক্কাভি, যিনি তার স্ত্রী এবং তিন সন্তানকে নিয়ে শহর ছেড়ে পালিয়েছিলেন, তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, এটি ট্র্যাজেডিতে ভরা একটি কালো বছর হয়ে আমাদের স্মৃতিতে থেকে যাবে বাকিটা জীবন।
৩৭ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি এখন দক্ষিণ গাজার রাফাহতে জাতিসংঘের আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করছেন। তিনি বলেন, এই হামলায় তার বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং তার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে।
তবুও তিনি নতুন বছর ২০২৪ সাল নিয়ে আশাবাদী। তিনি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় এই যুদ্ধের অবসান ঘটবে, নতুন বছর আরও ভালো হবে, এবং আমরা আমাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারব। নিজেদের বাড়িঘর পুনর্নির্মাণ করতে পারব, এমনকি ধ্বংসস্তূপের উপর অন্তত একটি তাঁবু বানিয়ে থাকতে পারব।’
চলতি বছরে ইউক্রেনে রুশ হামলা দ্বিতীয় বছরে গড়িয়েছে। তবে মস্কোর পক্ষ থেকে নতুন করে বছরে সেখানে হামলা বন্ধের তেমন কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ অনেকেই দাবি করেন তারা নতুন বছরে যুদ্ধে জয়লাভ করবেন।
জেএন/পিআর