কয়েক আগে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষের মধ্যে ভারতে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেই ১৫১ সেনাকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
সংঘর্ষের পর এসব সেনারা ভারতে প্রবেশ করে আসাম রাইফেলসের কাছে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে ভারত প্রাথমিকভাবে আশ্রয় দিলেও পরে আকাশপথে তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
সাম্প্রতিক সময়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। দেশটির কয়েকটি প্রদেশে বিদ্রোহীদের সাথে চলছে সামরিক বাহিনীর এই সংঘাত।
আর সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সংঘর্ষের মধ্যেই গত ২৯ ডিসেম্বর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মিজোরামে পালিয়ে আসে মিয়ানমারের ১৫১ জন সৈন্য। বিদ্রোহীদের সঙ্গে সীমান্ত এলাকায় আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর তারা ভারতে প্রবেশ করেন।
তবে মঙ্গলবার মিয়ানমারের সামরিক বিমানে করে তাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে ভারতের সরকারি সূত্র জানিয়েছে।
এনডিটিভি বলছে, পালিয়ে আসা সৈন্যদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর একটি বিমান মঙ্গলবার মিজোরামের লেংপুই বিমানবন্দরে অবতরণ করে। পুরো ব্যবস্থাটি নয়াদিল্লির তত্ত্বাবধানে ছিল।
সামরিক এই বিমানটি মিয়ানমারের মান্দালে থেকে উড্ডয়ন করে এবং মিজোরামে অবতরণ করে। পরে ১৫১ জন সৈন্যকে প্রতিবেশী এই দেশটির আকিয়াবে নিয়ে যায়।
আসাম রাইফেলসের এক কর্মকর্তা এর আগে জানিয়েছিলেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মধ্যে আলোচনা চলছে এবং কিছু দিনের মধ্যেই মিয়ানমারের সৈন্যদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
এর আগে গত নভেম্বরে গণতন্ত্রপন্থি মিলিশিয়া পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) মিয়ানমার-ভারত সীমান্তে বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি দখল করে নেওয়ার পর মিয়ানমারের মোট ১০৪ জন সৈন্য মিজোরামে পালিয়ে এসেছিলেন।
পরে ভারতীয় বিমানবাহিনী তাদের বিমানে করে মণিপুরের মোরেতে নিয়ে যায়। পরে সেখান থেকে তারা আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে মিয়ানমারের নিকটতম সীমান্ত শহর তামুতে প্রবেশ করে।
মূলত ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সম্প্রতি সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। কয়েক মাস আগে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সদস্যরা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে সমন্বিত হামলা শুরু করে।
ইতোমধ্যে তারা নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে কিছু শহর ও সামরিক চৌকির দখল নিয়েছে।
অবশ্য গত ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর শান্তি আলোচনায় মধ্যস্থতা করেছিল চীন। ওই সময় উভয়পক্ষ অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সংলাপ বজায় রাখতে সম্মত হয়েছিল।
তবে বিদ্রোহীদের জোট পরে এক বিবৃতিতে মিয়ানমারের ‘স্বৈরাচার সরকারকে’ পরাজিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং শান্তি আলোচনা বা যুদ্ধবিরতির কথা উল্লেখ করেনি।
এই পরিস্থিতিতে দিন কয়েক আগে নাগরিকদের উত্তর মিয়ানমার ছাড়ার নির্দেশ দেয় চীন।
জেএন/পিআর