নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের মধ্যাঞ্চলে ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। শক্তিশালী এ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৫। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভূমিকম্পে অন্তত ৩০টি বাড়ি ধসে পড়েছে এবং রাস্তাঘাটে বড় ফাটল ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকজন ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েছে।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। ভূমিকম্পের কারণে প্রথমে বড় ধরনের সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও পরে তা তুলে নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সোমবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পের জেরে জাপানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫ জনে পৌঁছেছে। উদ্ধারকারীরা বেঁচে যাওয়াদের সন্ধানে বুধবারও মরিয়া হয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার প্রথমে দেশটির মধ্যাঞ্চলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এরপর একদিনে মোট ১৫৫টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে দেশটিতে। জাপানের আবহাওয়া অফিস এই তথ্য জানিয়েছে। এসব ভূমিকম্পের জেরে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
উদ্ধারকারীরা বেঁচে যাওয়াদের সন্ধানে বুধবারও মরিয়া হয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন। প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার জাপানে আঘাত হানা ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল দেশটির ইশিকাওয়া অঞ্চল। এর ফলে সমুদ্রে বড় বড় ঢেউয়ের সৃষ্টি হয় এবং বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্থানীয় সময় ৪টা ১০ মিনিটে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। ভূমিকম্পটি হোনশু দ্বীপের নোটো প্রদেশে আঘাত করলে সেখানকার কর্মকর্তারা উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এই ভূমিকম্পে সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনও অজানা, তবে বেশ কয়েকটি শহরে বহু ভবন ধসে পড়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে বেশ কিছু মানুষ আটকা পড়েছেন।
সংবাদসংস্থা এএফপি বলছে, ইশিকাওয়া অঞ্চলের নোটো প্রদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে। সেখানে শত শত বিল্ডিং আগুনে পুড়ে গেছে এবং ঘরবাড়ি মাটিতে মিশে গেছে।
আঞ্চলিক সরকার মঙ্গলবার রাতে জানিয়েছে, ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৫৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আরও ২২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
তবে আফটারশক এবং খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে ধ্বংসস্তূপে অনুসন্ধান চালিয়ে যাওয়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে উদ্ধারকারীরা। ৩১ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
জাপানের আবহাওয়া সংস্থা (জেএমএ) নোটো এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা জারি করেছে। এই পরিস্থিতিতে সেখানে উদ্ধার অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে উপকূলীয় শহর সুজুর মেয়র মাসুহিরো ইজুমিয়া বলেছেন, “সেখানকার প্রায় কোনও বাড়িই আর দাঁড়িয়ে নেই।”
তিনি বলেন, “শহরের প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি সম্পূর্ণ বা প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে… পরিস্থিতি সত্যিই বিপর্যয়কর।” সূত্র: ফিন্যান্সিয়াল টাইমস, ইউরোনিউজ, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস
জেএন/পিআর