বিএনপির দুর্বৃত্তপনার বিরুদ্ধে জবাব দিতে নৌকায় ভোট দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে স্থিতিশীলতা এসেছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে আবারো ভয়াল রূপ নিয়ে হাজির হয়েছে বিএনপি-জামায়াত। বিএনপির এ দুর্বত্তপনার জবাব দিতে হবে। নৌকায় ভোট দিয়ে বিএনপিকে জবাব ও উন্নয়নের পক্ষে রায় দিবেন।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে পাঁচটি জেলা ও একটি উপজেলার নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেছেন, নির্বাচনে কোনো সংঘাত চাই না। যাকে খুশি ভোট দেবেন। ভোটটা অনেক জরুরি। ভোটে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ধারাবাহিকভাবে গণতন্ত্র থাকার কারণে যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিলো সেগুলো অর্জিত হয়েছে, দারিদ্রের হার কমেছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে, বেকারত্বের হার কমেছে।
তিনি বলেন, বাংলদেশের জন্য নির্বাচন জরুরি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ যাতে ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যার যার ভোট সে সে দিবেন। কোন সংঘাত আমরা চাই না। নির্বাচন হবে। জনতার জয় হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো খালেদা জিয়া। থাকতে পারেনি। ভোট চুরি করলে জনগণ মেনে নেয় না। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার পতন ঘটে। ৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হয়। তারপর পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। কিন্তু ওদের শিক্ষা হয়নি। তাই আবারও ২০০১ সালে ভোট কারচুপি, ভোট চুরি, জনগণের ভাগ্য নিয়ে খেলা শুরু করে। তাদের দুঃশাসনের কারণে দেশে ইমার্জেন্সি (জরুরি অবস্থা জারি) হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে আমি যখন গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হইনি, তখন ষড়যন্ত্রের শিকার হই। ক্ষমতা আসতে পারেনি। গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় বিএনপি-জামায়াত জোট আসে। ক্ষমতায় এসেই তারা দুর্নীতি লুটপাত, জঙ্গিবাদ, বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা এবং আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের অকাট্য নির্যাতন শুরু করে। তাদের দুর্নীতি এমন পর্যায়ে চলে যায়, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ও আরেক দিকে তারেক যে হাওয়া ভবন খুলে দুর্নীতির আখড়া গড়ে তোলে। ব্যবসা-বাণিজ্য সর্বক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করে।
যার ফলে দেশে চরম অরাজকতার সৃষ্টি হয়। তারা জানতো, জনগণ তাদের ভোট দেবে না প্রত্যাখ্যান করবে, তখন তারা এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার লিস্ট তৈরি করে। সেভাবে নির্বাচন করার প্রচেষ্টা নেয়। সেখানে তারা ব্যর্থ হয়।
রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলা, রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী জেলা ও মহানগর, ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইল জেলা এবং চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, কুমিল্লা উত্তর-দক্ষিণ জেলা ও মহানগর এবং চট্টগ্রাম জেলার স্বন্দীপ উপজেলায় নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
২০ ডিসেম্বর সিলেট থেকে আওয়ামী লীগের আনুষ্ঠানিক নির্বাচনি প্রচার শুরু করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। ওই দিন হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহ পরানের (রহ.) মাজার জিয়ারতের পর দলের নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি।
এরপর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনি জনসভা করছে আওয়ামী লীগ। এতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন থেকে জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জেএন/পিআর