গেল কিছুদিন ধরে হিম বাতাস আর কনকনে ঠান্ডার দাপটই জানান দিচ্ছে এখন শীতের ভরা মৌসুম। তবে এর কোন প্রতিচ্ছায়া পড়েনি সবজির বাজারে।
প্রতি বছর শীত মৌসুমে বাজারে সবজির দাম সবচেয়ে কম থাকলেও এবার কমছে না। চট্টগ্রামের প্রায় প্রতিটি সবজি বাজারে উত্তাপ। প্রতিদিনই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির দাম।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় পর্যাপ্ত উৎপাদন এবং মজুত থাকার পরেও সবজির এমন দামের কোনো যৌক্তিক কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না ক্রেতারা।
তবে বিক্রেতারা দাবি করছে, গত মাসের শুরুতে বৃষ্টিতে কিছুটা ফলন নষ্ট হয়েছে। এ ছাড়া, হরতাল অবরোধ ও নির্বাচনের কারণে বাজারে প্রভাব পড়েছে।
মাছ, মাংস, ডিম আগেই নাগালের বাইরে। নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর সবজিতেও স্বস্তি মিলছে না। শীতের শুরুতে সবজির দাম কমলেও কয়েকদিনের ব্যবধানে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে বাজারে।
চট্টগ্রাম নগর ও জেলার বেশ কয়েকটি কাঁচাবাজার ও সবজির আড়ত ঘুরে দেখা গেছে শাকসবজির ঊর্ধ্বমুখী দামের চিত্র।
সিম বাজারে কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়ে বর্তমান বাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি ৫০ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে স্থানীয় বাজারগুলোতে কাঁচামরিচের কেজি পৌঁছেছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকায়। ৬০ টাকা কেজি বেগুন, ৫৫ টাকা করলা আর আলুর দাম আরো বেড়ে কেজি ৭০ টাকা হয়ে গেছে।
৫০ টাকার নিচে কেউ কিনতে পারছে না বাঁধাকপিও। লাউ প্রতি পিস ৮০ টাকা, মিস্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা আর মুলা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।
এ ছাড়া পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৫০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা, পেঁয়াজের ফুলকা প্রতি আঁটি ২০ টাকা, শালগম প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৮০ টাকা, গাঁজর প্রতি কেজি ৬০ টাকা, খিঁড়া প্রতি কেজি ৫০ টাকা এবং পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে পটিয়া মুন্সেফ বাজারে বাজার করতে আসা গণমাধ্যমকর্মী কাউসার জানান, বছরের অন্যান্য সময়ের চেয়ে শীতকালে সবজির দাম কম থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু বাজারে এসে দেখছি পুরো উল্টো চিত্র।
স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় আরো দ্বিগুন দাম হাঁকছে বিক্রেতরা। বাজারে যে সবজির দাম চলছে, তা সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার ছাড়া আর কিছুই না।
নগরীর কাজির দেউরি বাজারে আসা ব্যাংকার তুতুল চক্রবর্তী বলেন, অন্যান্য বছর শীতের সময় কেজি ১০ টাকায় ফুলকপি আর বাঁধাকপি কিনতে পারতাম।
আজ বাজারে এসে ৬০ টাকার নিচে কোন বিক্রেতা কথায় বলছে না। সিম কিনতে হচ্ছে ৮০ টাকায়। কি অদ্ভুত বিষয়! বাজারে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় যার যা ইচ্ছে খেয়াল খুশী মতো দাম নিতে পারছে।
একই বাজারের সবজি বিক্রেতা আকবর জানায়, গত মাসের শুরুতে আকস্মিক বৃষ্টিতে খেতে ফসল নষ্ট হয়েছে। হরতাল-অবরোধের প্রভাবও পড়েছে। তবে বাজারে সবজি সরবরাহ একটু বাড়লেই দামও কমে যাবে বললেন আরেক বিক্রেতা ফজল আলী।
জেএন/পিআর