চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালী থানাধীন এস এস খালেদ রোডে এক ইতালিয়ান আলোকচিত্রীর হাতব্যাগ ছিনতাই করে শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের জালে ধরা পড়েছে পুরো ছিনতাইকারী চক্র।
পুলিশ জানায়, ছিনতাইকারী চক্রের পুরো গ্রুপকে গ্রেফতার করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, সিনেমা প্যালেস, পুরাতন রেল স্টেশন ও ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকায় অভিযান চালায় সিএমপি‘র কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
এসময় ইতালিয়ান পর্যটকের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া টাকা উদ্ধারের পাশাপাশি চারজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় টিম কোতোয়ালী। জব্দ করা হয় ছিনতাইকাজে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা।
গ্রেফতারকৃতরা হলো-কল্পলোক আবাসিক এলাকার খালেক কোম্পানি কলোনির বাসিন্দা মো. রুবেল (২৯), মিরসরাই উপজেলার মধ্যম তালবাড়িয়া শফি খান বাড়ির নুর উদ্দিন প্রকাশ রিয়াজ (৩২), নোয়াখালীর কবির হাট আনোয়ার আলী জমদ্দার বাড়ির মো. মুমিন (৫২) ও খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি ইকবালের বাড়ির মো. আরাফাত মিয়া (২১)।
এর আগে গত ২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে কর্ণফুলী টাওয়ারের সামনে আলোকচিত্রী ক্রিষ্টিনা জ্যামা ক্যাপরা (৫৮) ছিনতাইয়ের শিকার হন।
সে জানায়। সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে আসা ছিনতাইকারীরা তাকে ভয় দেখিয়ে সাথে থাকা ১টি কালো রঙের হাত ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ব্যাগে ইতালিয়ান ব্যাংকের ২টি ক্রেডিট কার্ড, নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১টি মোবাইল সেট ছিলো। এ ঘটনায় তিনি কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মিজানুর রহমান চৌধুরী জানান, টিম কোতোয়ালী ঘটনাস্থলের আশেপাশের অন্তত ৫০টি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং সিসি টিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে সংগৃহীত সিএনজি অটোরিকশার পিছনে ‘সিরাতাল মুস্তাকিম’ লিখা আছে এমন অটোরিকশা ১৬টি থানা এলাকার অন্তত ১০০টি গ্যারেজে খোঁজ করা হয়।
তারপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ৪ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে চকবাজার থানা এলাকা থেকে আসামি মো.রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। তার হেফাজত হতে ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয় এবং ছিনতাই করা নগদ ৮ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
কোতোয়ালী থানার ওসি এস এম ওবায়েদুল হক জানান, এ ঘটনায় প্রথমে আসামি রুবেলকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে পলাতক অন্য আসামিদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে।
তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নুর উদ্দিন প্রকাশ রিয়াজকে সিনেমা প্যালেস এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার কাছে থাকা ছিনতাইয়ের ১০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে মো. মুমিনকে পুরাতন রেলস্টেশন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
আরেক আসামি আরাফাত মিয়াকে রাত সোয়া ২টার দিকে ফটিকছড়ির উত্তর ধুরুং এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় এবং তার হেফাজতে থাকা লুণ্ঠিত নগদ ৩ হাজার ৮০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী এডিসি (দক্ষিণ) নোবেল চাকমা এবং কোতোয়ালী জোনের এসি অতনু চক্রবর্ত্তী জানান, চার সদস্যের এই ছিনতাইকারী চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই করে আসছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
তাদের একজন সিএনজি অটোরিকশা চালায় এবং অপর দুইজন অটোরিকশার পিছনের সিটে যাত্রীবেশে বসে রাতের বেলায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে।
তারা টার্গেটকে অনুসরণ করে নির্জন জায়গায় কৌশলে ভয় দেখিয়ে পথচারী ও যাত্রীর সাথে থাকা মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জেএন/পিআর