কক্সবাজার-ঢাকা রুটে চলতে শুরু করেছে ‘পর্যটক এক্সপ্রেস‘ নামে আরও এক জোড়া নতুন ট্রেন। আজ প্রথম যাত্রায় এ ট্রেনের যাত্রী ৭৮৫ জন।
বুধবার (জানুয়ারি) ভোর সোয়া ৬টায় অত্যাধুনিক ১৬টি কোচ সংযুক্ত ট্রেনটি কক্সবাজার আইকনিক রেলওয়ে স্টেশনের উদ্দ্যেশে ঢাকা কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে যায়। এর আগে যাত্রীরা ট্রেনে উঠার আগে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের শুভেচ্ছা জানায়।
যাত্রীরা প্রত্যাশা রাখেন, যাত্রীসেবার মান অনন্য থাকুক, নিরাপত্তার বিষয়টিও সবসময় গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, নতুন ট্রেন ‘পর্যটক এক্সপ্রেস’ বুধবার ভোর সোয়া ৬টায় কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে যায়। এর আগে ভোর সাড়ে ৫টায় এক সংক্ষিপ্ত আনুষ্ঠানিকতার আয়োজনও করা হয়েছে স্টেশনে।
জানা গেছে, কমলাপুর থেকে কক্সবাজারের নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ৬৯৫ টাকা। এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া এক হাজার ৩২৫ টাকা। বিমানবন্দর স্টেশন থেকেও একই ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
ঢাকা (কমলাপুর) থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনের নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ৪৫০ টাকা এবং এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া ৮৫৫ টাকা। একই ভাড়া বিমানবন্দর স্টেশন থেকেও।
এ ছাড়া চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার স্টেশন পর্যন্ত নন-এসি শ্রেণির ‘শোভন চেয়ার’ আসনের ভাড়া ২৫০ টাকা। এসি শ্রেণির ‘স্নিগ্ধা’ আসনের ভ্যাটসহ ভাড়া ৪৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কক্সবাজার থেকে ফিরতি পথেও একই ভাড়ার হার কার্যকর হবে।
পর্যটক এক্সপ্রেসের ঢাকাগামী ট্রেনের নম্বর ৮১৫ এবং কক্সবাজারগামী ট্রেনের নম্বর ৮১৬। ট্রেনের রেকে থাকবে মোট ১৬টি কোচ। মোট আসন ৭৮৫টি। কক্সবাজার রেলওয়ে স্টেশনকে ট্রেনের রেক বেইজ ধরা হয়েছে। সেখানেই ট্রেনের ওয়াটারিং, সার্ভিসিং ও ক্লিনিং করা হবে। ট্রেনের সাপ্তাহিক বন্ধ রোববার।
এর আগে ঢাকা থেকে কক্সবাজার পথে প্রস্তাবিত নতুন ট্রেনের নাম দেওয়া হয়েছে পর্যটক এক্সপ্রেস। নতুন এ ট্রেনের নামকরণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জানা গেছে, ১ ডিসেম্বর রাজধানীর সঙ্গে রেলপথে যুক্ত হয় সৈকত শহর কক্সবাজারের। সরাসরি চালু হয় ‘কক্সবাজার এক্সপ্রেস’ ট্রেনের যাত্রা। প্রথম ট্রেনটি যাত্রীদের কাছে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
এরপর নতুন আরেকটি ট্রেন চালুর বিষয়ে ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপকের কার্যালয় থেকে অতিরিক্ত মহাপরিচালকের (অপারেশন) কার্যালয়ে একটি প্রস্তাব আসে।
তাতে এ বছরের প্রথমদিন ১ জানুয়ারি থেকে আরেকটি একটি ট্রেন চালানোর অনুমোদন চাওয়া হয়। ‘পালংকি’, ‘তরঙ্গ এক্সপ্রেস’ ও ‘প্রবাল এক্সপ্রেস’-এ তিনটি নাম প্রস্তাব করা হয় রেলওয়ের পক্ষ থেকে। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যটক এক্সপ্রেস অনুমোদন করেন।
এর আগে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, ১ জানুয়ারি থেকে নতুন আরেকটি ট্রেন চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন পাওয়ার পর ট্রেনটি চালু হবে।
সোমবারের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আনা নতুন কোচ দিয়ে এই এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। পর্যটক এক্সপ্রেস নামের এক জোড়া এ ট্রেনের নম্বর দেওয়া হয়েছে ৮১৫/৮১৬।
পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের সময়সূচি
কক্সবাজার স্টেশন থেকে ৮১৫ নম্বর ট্রেন রাত ৮টায় ছেড়ে চট্টগ্রাম স্টেশনে পৌঁছাবে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। ২৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ট্রেনটি চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে রাত ১১টা ১৫ মিনিটে। এরপর বিরতিহীনভাবে ঢাকা (কমলাপুর) রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর সাড়ে ৪টায়।
অন্যদিকে ৮১৬ নম্বর ট্রেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে বিমানবন্দর স্টেশনে পৌঁছাবে ভোর ৬টা ৩৮ মিনিটে। সেখানে ৫ মিনিট বিরতি দিয়ে ভোর ৬টা ৪৩ মিনিটে বিমানবন্দর স্টেশন ছাড়বে।
এরপর বিরতিহীনভাবে চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে। সেখানে ২০ মিনিট বিরতি দিয়ে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম স্টেশন ছাড়বে। কক্সবাজার স্টেশনে পৌঁছাবে বিকেল ৩টায়।
এক্ষেত্রে ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাত্রাপথে ট্রেনে মোট সময় লাগবে ৯ ঘণ্টা ১৫ মিনিট। কক্সবাজার থেকে ঢাকা যাত্রাপথে সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
জেএন/পিআর