চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে রোগীদের দেওয়া সরকারি ওষুধ নিয়ে কারসাজির অভিযোগ পেয়ে ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করেছে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) টিম। হাতে নাতে ধরা পড়ে অনিয়ম। রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হাসপাতালের নার্সরাই জড়িত ওষুধ কারসাজিতে।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে জরুরি সেবা ১০৬ নম্বরে অভিযোগ পেয়ে অভিযানে চালানো হয়। দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের সময় সঙ্গে ছিলেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
ছদ্মবেশে চালানো অভিযানে ধরা পরে নানা অসঙ্গতি। অভিযানের সময় হাসপাতালের ইমারজেন্সি কেয়ার ইউনিটে গিয়ে দেখা যায়, নার্সের কাছে থাকা রেজিস্ট্রার খাতায় যে ওষুধের নাম উল্লেখ রয়েছে তা রোগীকে দেয়াই হয়নি। এমনকি শয্যায় রোগী ভর্তি না থাকা স্বত্তেও রোগীর নাম দেখিয়ে ওষুধ সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণও মিলেছে।
একই রকম অনিয়ম ধরা পড়ে হাসপাতালে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডেও। দেখা যায়, রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম উল্লেখ নেই, কিন্তু তা লেখা রয়েছে নার্সের রেজিস্ট্রার খাতায়। এ নিয়ে ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ মিনতি বড়ুয়াকে জিজ্ঞেসবাদ করা হলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিষয়টি নিয়ে ওই ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা খাতুনকেও জিজ্ঞেসাবাদ করে দুদক তদন্ত টিম। তিনিও কোনো উত্তর দিতে পারেনি।
অভিযান শেষে দুদক কর্মকর্তা এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা হট লাইনে অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালে ছদ্মবেশে অভিযান চালাই। এতে ওষুধ নিয়ে গরমিলের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এসব ওষুধের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছে নার্সরাই। আমাদের অভিযানের সময় হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সঙ্গে ছিলেন। তিনি দেখেছেন ওষুধ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে হাসপাতালে। আমরা বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে অবহিত করেছি। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দেই না। গত দুইদিন আগে এক দালালকে আটক করে পুলিশ। যেই অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। দুদকের অভিযানে যে অনিয়ম পাওয়া গেছে তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
জেএন/পিআর