পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি-জামাত দেশকে বিপদে ফেলার জন্য সব সময় চেষ্টা করেছে।
শকুনের দোয়ায় গরু মরে এ ধরনের একটি কথা প্রচলিত আছে, বিএনপি-জামাত চাচ্ছেন আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞা দিবে, গার্মেন্টস শিল্প বন্ধ হয়ে যাবে, মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে, দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হবে, তারপর তারা ক্ষমতায় আসবে।
মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিযুক্ত হবার পর প্রথম চট্টগ্রাম এলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিএনপি জামায়াতের এ চাওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে আপনি কতটুকু যুক্তিযুক্ত মনে করেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেন, তারা আল্লাহর কাছে কি প্রার্থনা করে আমি জানিনা। শকুনের দোয়ায় যেমন কখনো গরু মরে না, তেমনি বিএনপি’র অশুভ কামনায়ও বাংলাদেশের কোন কিছু অশুভ হবে না।
পূর্ব-পশ্চিম সবার সাথে আমাদের সম্পর্ক চমৎকার। সবার সাথে সম্পর্ককে আরো গভীর করার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন যে আন্তর্জাতিকভাবে মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে গ্রহণ করেছে, সেটির প্রমাণ হচ্ছে বহু নির্বাচনী পর্যবেক্ষক বাংলাদেশে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই, আইআরআই, ইউরোপীয় ইউনিয়নভূক্ত, সার্কভূক্ত, ওআইসিভূক্ত ও কমনওয়েলথভূক্ত দেশগুলোর পর্যবেক্ষক থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থার পর্যবেক্ষকরা বাংলাদেশে এসেছে। এবং তারা সবাই একযোগে মত প্রকাশ করেছে, বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবং এই নির্বাচনে অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম সহিংসতা হয়েছে। এটাই সবচেয়ে বড় ব্যাপার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অবজারভার তথ্য-উপাত্তের জন্য নির্বাচন কমিশনে গেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ড. হাছান বলেন, আমাদের বিদেশি বন্ধুদের আমাদের নির্বাচন নিয়ে আগ্রহ আছে, সেজন্য নির্বাচন কমিশনে গিয়েছেন। আমি আজকে কাগজে দেখলাম, নির্বাচন কমিশন যেই তথ্য উপাত্ত দিয়েছেন, এতে তারা সন্তুষ্ট হয়েছে। দেখুন, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেশিরভাগ নিবন্ধিত দল এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আপনারা জানেন, যেদিন নির্বাচন হয়, সেদিন প্রচন্ড শীত ও কুয়াশা ছিল। সেই কারণে ভোটের পার্সেন্টেজ প্রায় ৪২ শতাংশ, যদি কুয়াশা এবং শীত না থাকতো তাহলে আরো বেশি ভোট কাস্ট হত।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন এই নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্থ ও প্রতিহত করার জন্য বিএনপি যেভাবে আগুন সন্ত্রাস করেছে, পাঁচ তারিখ রাতেও যেভাবে অগ্নি সন্ত্রাস চালিয়েছে, এতে করে মানুষকে ভয় লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু মানুষ ভয় পায়নি, মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে গেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের দিন প্রতি দু’ঘন্টায় যে তথ্য দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। ম্যানুয়ালি ভোটে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর আসলে কত শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছে, সেটি নির্ভুলভাবে দেয়া সম্ভবপর নয়। ইভিএমএ ভোট হলে সেটা সাথে সাথে রেজিস্টার্ড হত। যেহেতু ইভিএমএ ভোট হয়নি, ম্যানুয়াল ভোটে প্রতি দুই ঘন্টার তথ্য কোন সময় সঠিকভাবে দেয়া সম্ভবপর নয়। সেজন্য সঠিক তথ্যটা এসেছে নির্বাচনের শেষে।
বৃহত্তর চট্টগ্রামের কক্সবাজারে ১৪ লাখ রোহিঙ্গা আছে, আপনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব¡ নিয়েছেন, তাদের ফেরত পাঠানোর জন্য আপনি কি উদ্যোগ নেবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেখুন, আমরা সবসময় কূটনৈতিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি, আমরা তাদের সাথে আরও এনগেজমেন্ট বাড়াচ্ছি, আমি ন্যাম সামিটে যাচ্ছি, সেখানে মায়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর সাথে আমার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। আমরা কূটনৈতিকভাবেই এই সমস্যার সমাধান করতে পারব বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী নিযুক্ত হবার পর প্রথম চট্টগ্রাম এলে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে ফুলেল সংবর্ধনা জানান।
জেএন/পিআর