সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে এতদিন ধানের শীষ-নৌকা প্রতীকে লড়াই হয়ে আসছে ভাইয়ে-ভাইয়ে। এ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে করিম চৌধুরী ও তার চাচাত ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী (গিকা) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আসছেন। এবার গিকা চৌধুরী কারাগারে আছেন। তাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপট ভিন্ন।
এ আসনে এবার নৌকা-ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে লড়বেন চাচা-ভাতিজা। লড়াই হবে বিএনপি প্রার্থী গিয়াস কাদের চৌধুরীর ছেলে সামির কাদের চৌধুরী আর আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফজলে করিম চৌধুরীর মধ্যে। সম্পর্কে তারা চাচা-ভাতিজা। সামির কাদের রাউজান উপজেলা বিএনপির সদস্য। বিপিএলের দল চিটাগং কিংসের অন্যতম মালিক তিনি।
বুধবার (২৮ নভেম্বর) মনোনয়ন জমাদানের শেষদিন আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী হিসেবে এ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরী। বিএনপি থেকে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন সামির কাদের চৌধুরী ও স্থানীয় বিএনপি নেতা জসিম উদ্দীন শিকদার। তবে সামির কাদের চৌধুরীই নির্বাচন করবেন। শেষ পর্যন্ত এ আসনে চাচা–ভাতিজার ভোট লড়াই হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরা এলাকাছাড়া অনেকদিন। সাকা চৌধুরীর ফাঁসির পর এখানে তারা আরও কোণঠাসা। তবে বর্তমান সাংসদ ফজলে করিম চৌধুরী চারবার বিপুল ভোটে চাচাত ভাই গিকা চৌধুরীকে হারিয়েছেন। সামির কাদের চৌধুরী বাবার আসন পুনরুদ্ধার করতে পারবেন কি-না, এ নিয়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলছেন ভোটাররা।
আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জয়নিউজকে বলেন, এবার জাতীয়ভাবে হ্যাটট্রিক করবে আওয়ামী লীগ। একইসঙ্গে ফজলে করিম চৌধুরী চাচাত ভাই গিকা চৌধুরীর মত ভাতিজা সামিরকে বিপুল ভোটে হারাবেন।
কারণ জানতে চাইলে তারা জয়নিউজকে বলেন, এ নির্বাচনি এলাকায় ফজলে করিম অনেক উন্নয়ন করেছেন। তাই রাউজানবাসী নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার তাঁকেই জয়ী করবে।
অন্যদিকে বিএনপি নেতারা জয়নিউজকে জানান, রাউজানে চৌধুরী পরিবারের বিশাল ভোটব্যাংক রয়েছে। তাদের আশা, সামির কাদের চৌধুরীর হাত ধরে রাউজানে বিএনপি নিজেদের হারানো আসন পুনরায় ফিরে পাবে। নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হলে রাউজানে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গত ১০ বছরে বিরোধীদল তো দূরের কথা, নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বীরাও রাউজানে কোনো সভা-সমাবেশ করতে পারেনি। উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের সব নেতাকর্মী ফজলে করিমের ইশারায় চলে। উপজেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও তার পক্ষে।
ফজলে করিম চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, ‘আমি আশা করি, রাউজানবাসী আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে। আমি ভোটের জন্য প্রতিটি এলাকায় যাব। রাউজানবাসী আমাকে খুব ভালোবাসে। প্রতিবার তারা আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে। এবারও আমাকে ভোট দেবে।’
‘তবে প্রতিপক্ষকে আমি কখনো ছোট বা দুর্বল মনে করি না’, যোগ করেন তিনি।