কোনো বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আজ আর সরবরাহ স্বাভাবিক নাও হতে পারে। সম্ভাবনা দেখছে না কতৃর্পক্ষ।
শুক্রবার সকাল থেকে লাইনে গ্যাস না পাওয়ায় বাড়ি ও রেস্তোরাঁয় রান্না হয়নি খাবার। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন চট্টগ্রামের লক্ষ লক্ষ মানুষ।
বৈদ্যুতিক চুলা ও লাকড়ি জ্বালিয়ে কেউ কেউ বাড়িতে রান্নার কাজ সারলেও অধিকাংশ মানুষ নির্ভর ছিলো হোটেল রেস্তোরার ওপর। তবে সেখানেও দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন, মুহূর্তে শেষ হয়ে যাচ্ছে সব খাবার।
এদিকে হঠাৎ গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নগরের ফিলিং স্টেশনগুলোতেও গ্যাস মিলছে না। এ কারণে সড়কে কমে গেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চলাচল। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এ নিয়ে ভোগান্তি ছিল তুলনামূলক কম।
সব মিলিয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি না থাকায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চট্টগ্রামবাসীকে।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আগামীকাল শনিবার (২০ জানুযারি) সরবরাহ পুনরায় চালু হতে পারে।
গ্যাস সংকটের বিষয়টি নিশ্চিত করে কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) মহাব্যবস্থাপক আমিনুর রহমান বলেন, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করে চট্টগ্রামে সরবরাহ করা হয়।
আমদানি করা এলএনজি রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহের জন্য কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনাল আছে। এর মধ্যে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির টার্মিনালটি গত ১ নভেম্বর থেকে বন্ধ রয়েছে। এটি গতকাল বৃহস্পতিবার চালু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চালু করা যায়নি।
এ ছাড়া পেছনের গতি বা ব্যাক প্রেশার না থাকার কারণে সামিট এলএনজি টার্মিনালটিও গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। এ কারণে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
আমিনুর রহমান আরও বলেন, আজ সারা দিন গ্যাস না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সামিটের টার্মিনালটি খালি করা হচ্ছিল। এটিও রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যাওয়ার কথা আছে। সব মিলিয়ে কখন পরিস্থিতি ভালো হবে বলা যাচ্ছে না।
কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিপনন উত্তর বিভাগের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী গৌতম চন্দ্র কুন্ডু বিকেলে বলেন, কিছুক্ষণ আগে পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে মিটিং শেষ করলাম। আশাকরি আগামীকাল শনিবার (২০ জানুয়ারি) গ্যাস সরবরাহ পুনরায় চালু হতে পারে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামে কেজিডিসিএলের গ্রাহক সংযোগ ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি। এর মধ্যে গৃহস্থালি সংযোগ ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি, বাকিগুলো শিল্প-বাণিজ্যসহ অন্য খাতে। এসব খাতে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২৫ মিলিয়ন ঘনফুট। কিন্তু স্বাভাবিক সময়ে মহেশখালী এলএনজি টার্মিনাল থেকে পাওয়া যায় ২৮০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট।
জেএনপিআর