বড় ব্যবধানের হার দিয়ে টাইগার যুবাদের যাত্রা হলো বিশ্বকাপে। অথচ সম্প্রতিই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারতকে উড়িয়ে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা ঘরে তুলেছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
শনিবার (২০ জানুয়ারি) ব্লুমফন্টেইনের মানগুয়ান ওভালে টস জিতে ভারতকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। মারুফ মৃধার ফাইফার সত্ত্বেও আদর্শ সিং এবং অধিনায়ক উদয় শাহরানের অর্ধশতকে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রান সংগ্রহ করে ভারতের যুবারা।
জবাবে ভারতীয় বোলারদের বোলিং তোপে পড়ে ২৫ বল আগে ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। এতে ৮৪ রানের বিশাল ব্যবধানে হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মৃধা-রাব্বিদের।
ভারতের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব ভালো হয়নি বাংলাদেশে। দুই ওপেনার পাওয়ার প্লের ৬.৩ ওভারে ৩৮ রান তুলতে সক্ষম হয়। এরপর জিসান লিম্বানির বলে আউট হলে ভাঙে জুটি।
এরপর দ্বিতীয় উইকেটে নামা রিজওয়ান স্কোরবোর্ডে এক রান যোগ হতেই রানের খাতা খোলার আগে পান্ডের বলে বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
স্কোরবোর্ডে আরও ১১ রান যোগ করতে টাইগার যুবারা হারিয়ে ফেলে আরো দুই উইকেট। এতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন আরিফুল ইসলাম ও শিহাব জেমস। তবে দলীয় ১২৭ রানে আরিফ আউট হলে ভাঙে এই জুটি। সাজঘরে যাবার আগে ৭১ বলে ৪১ করেন তিনি।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে যুবা টাইগাররা। মাঝে শিহাবের ৭৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস টাইগারদের হারের ব্যবধান কমিয়েছে।
শেষ পর্যন্ত ৪৫.৫ ওভারে ১৭০ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ যুবদের ইনিংস। এতে ৮৪ রানের বিশাল জয়ে যুব বিশ্বকাপের উড়ন্ত সূচনা করলো পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। ম্যান ইন ব্লুদের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন সামি পান্ডে।
এর আগে ব্লুমফন্টেইনের উইকেটে ঘাস থাকায় টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করেন পেসার মৃধা।
৩১ রানের তুলে নেন আরশিন কুলকার্নি (৭) এবং মুশের খানকে (৩)। পাওয়ার প্লেতে দুই উইকেট হারালেও তৃতীয় জুটিতে ম্যাচে ফিরে আসে ভারত।
তবে ইনিংসের সপ্তম ওভারে আম্পায়ারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তের বলি হয় বাংলাদেশ। ইকবাল হোসেনের বলে স্লিপে আউট হয়ে যান ভারতীয় ওপেনার আদর্শ।
টাইগার যুবরা যখন উল্লাস করবে এমন সময় আম্পায়ার ডোনোভান সংকেত দেখান নো বলের। তবে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজের তথ্যানুসারে, আম্পায়ার ওভার স্টেপসের জন্য নো বল দিলেও টেলিভিশন রিপ্লেতে দেখা যায় তার বুট পপিং ক্রিজের অনেকটা ভেতরে ছিল। ফলে আম্পায়ারের বাজে সিদ্ধান্তে বৈধ বল করেও উইকেট থেকে বঞ্চিত হয়েছে টাইগার যুবারা।
এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক উদয় শাহরান। তাকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামলে বড় জুটি গড়েন ওপেনার আদর্শ। এই দু’জনের শতরানের জুটিতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় ম্যান ইন ব্লুরা। তবে দলীয় ১৪৭ রানে আদর্শ সিং আউট হলে ভাঙে ১১৬ রানের এই জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ চারে ৯৬ বলে ৭৬ রান করেন তিনি।
চতুর্থ উইকেটে ভারতের হয়ে ব্যাট করতে আসা প্রিয়াংশু মলিয়াকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন অধিনায়ক উদয়। তবে সঙ্গীকে হারিয়ে উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৬৯ রানে আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। যাবার আগে ৪ চারে ৯৪ বলে ৬৪ রান করেন উদয়।
এরপর শেষ দিকে মলিয়ার ২৩ ও দাসের ২৬ রানের ক্যামিও ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৫১ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট নেন মারুফ মৃধা।
জেএন/পিআর