বর্তমান সরকারকে কোনো বিদেশী শক্তি ক্ষমতায় বসায়নি উল্লেখ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শেখ হাসিনার সরকার জনগণ দ্বারা নির্বাচিত সরকার।
শনিবার(২৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাদের এ কথা বলেন।
এ সময় মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিএনপির কালো পতাকা মিছিলের বিরুদ্ধে সারাদেশে লাল সবুজের পতাকা হাতে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরো মন্ত্রিসভা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন। দ্রব্যমূল্য শিগগির নিয়ন্ত্রণে আসবে।
ওবায়দুল কাদের জানান, চীন, রাশিয়া ও ভারত বন্ধু হলেও আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। জনগণের কল্যাণে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গয়েশ্বর বাবু আজ পল্টনে হাজির হয়েছেন, কোথায় ছিলেন এতদিন। বলেছিলেন, আমরা অলিগলি খুঁজে পাব না। এখন গয়েশ্বর বাবু অলিগলি খুঁজে পাচ্ছেন না।
কাদের বলেন, দেখতে দেখতে ১৫ বছর। সামনে আছে আরও পাঁচ বছর। কবে হবে আন্দোলন। রোজার পর না ঈদের পর। মানুষ বাঁচে আর কয় বছর। এই আন্দোলন মানুষ মানে না। হরতাল ডাকে, অবরোধ ডাকে মানুষ আসে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশিদের ভয় দেখায়। ৪১.৮ পার্সেন্ট ভোটারের ভোটে শেখ হাসিনা সরকার নির্বাচিত করেছে। এটা জনগণের সরকার। কোনো বিশিদের সরকার না। বাংলাদেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত সরকার। তারা কালো পতাকা মিছিল করে। কালো পতাকা মানে কী, শোকের মিছিল। কালো পতাকা ভুয়া।
বিএনপির নেতাকর্মীরা হতাশ, তারা আর তারেকের ফরমায়েশি কথায় কান দেয় না। খেলা একটা হয়ে গেছে। নির্বাচনের খেলা শেষ। এখন খেলা হবে রাজনীতির। এখন খেলা হবে আগুনসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে।
সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে নির্বাচন বর্জনকারীদের জনগণ গ্রহণ করে না।
আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য এমন কোনো ষড়যন্ত্র নাই বিএনপি করেনি। তাদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নির্বাচিত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ আমাদের আনন্দের দিন, আমাদের নেত্রী পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন। আজকে বিএনপি কাদের কালো পতাকা দেখাবে।
কালো পতাকা মিছিল এ দেশের জনগণ মোকাবেলা করেছে আগামীতেও করবে। আর আপনারা (বিএনপি) বোকার মতো থাকবেন। আপনারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন না। ইতিহাস বিকৃতি করে আপনারা টিকে থাকতে চান। অতীতের ভুলের জন্য আপনাদের ক্ষমা চাইতে হবে।’
আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিগত দিনে অনেকবার বিএনপি-জামায়াতকে বলেছিলাম জনগণের সঙ্গে কথা বলুন। কিন্তু তারা বাংলার মানুষের সঙ্গে কথা বলেনি। আজকে বাংলার মানুষ শেখ হাসিনাকে আগামী পাঁচ বছরের জন্যে দায়িত্ব দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের জন্য কাজ করে যাবেন।
আমরা আগামী পাঁচ বছরে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাব। যারা প্রতিহত করার চেষ্টা করবে, তাদেরকে মাঠে নামতে দেওয়া হবে না। আপনারা সজাগ থাকবেন। আমরা বিগত দিন যে ছাড় দিয়েছি আগামী দিনে সে ছাড় দেব না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ বিএনপিকে কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে।
এর আগে দুপুর থেকেই সমাবেশস্থলে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসতে থাকে ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিকেল চারটার মধ্যে সমাবেশস্থল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। নেতাকর্মীরা দলীয় স্লোগানে সমাবেশস্থল মুখরিত করে রাখে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভপতিমণ্ডলীর সদস্য এডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, হান্নান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তৃতা রাখেন।
জেএন/পিআর