দ্বাদশ জাতীয় সংসদে স্পিকার পদে আবারও নির্বাচিত হয়েছেন ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এনিয়ে টানা চতুর্থ বারের মতো স্পিকার নির্বাচিত হলেন তিনি।
মঙ্গলবার বিকেলে সংসদে স্পিকার পদে শুধু মাত্র তার নামটি প্রস্তাবনায় আসে। প্রস্তাবটি করেন নোয়াখালী-৫ আসনের সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদের। আর সমর্থন করেন মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য চিফ হুইপ নূরে আলম চৌধুরী।
ওবায়দুল কাদের ছাড়া আর কেউ নাম প্রস্তাব না করায় ডেপুটি স্পিকার সদস্যদের সামনে স্পিকার হিসেবে শিরীন শারমিন চৌধুরীর নাম প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাশ হয়। এরপর সংসদ ভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে শপথ নেন শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শপথ নেওয়ার পর তাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল তৎকালীন জাতীয় সংসদের স্পিকার মো. আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেয়ার পর স্পিকারের পদটি শূন্য হয়। এরপর সংরক্ষিত সংসদ সদস্য তৎকালীন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ৩০ এপ্রিল স্পিকার হিসেবে নির্বাচিত হন।
২৪ জানুয়ারি ২০১৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এরপর দশম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আওয়ামী লীগ আবারো সরকার গঠন করলে শিরীন শারমিনকে দ্বিতীয়বারের মতো স্পিকার নির্বাচিত করা হয়।
২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত তিনি স্পিকার হিসেবে দায়িত্বরত রয়েছেন। অত্যন্ত মেধাবী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন-সিপিএর নির্বাচিত প্রথম বাংলাদেশি প্রেসিডেন্ট। সংসদ পরিচালনা ছাড়াও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
২০০৯ সালে সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য হিসাবে জাতীয় সংসদে আসেন শিরীন শারমিন। মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে ২০১৩ সালে ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম নারী স্পিকার নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ছেড়ে দেওয়া রংপুর-৬ (পীরগঞ্জ) আসন থেকে উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসেন স্পিকার শিরীন শারমিন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার শ্বশুরবাড়ির এলাকা পীরগঞ্জের আসনটি নোয়াখালীর মেয়ে শিরীনকে ছেড়ে দেন। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে শিরীন শারমিনকে প্রার্থী করে আওয়ামী লীগ।
পেশায় আইনজীবী শিরীন শারমিনের জন্ম ১৯৬৬ সালে ৬ অক্টোবর ঢাকায়। তার বাবা রফিকউল্লাহ চৌধুরী ছিলেন স্বাধীনতার পর প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব। তার মা অধ্যাপক নাইয়ার সুলতানা বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের সদস্য ছিলেন। তার নানা সিকান্দার আলী ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান হাইকোর্টের বিচারপতি।
১৯৮৯ সালে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এল এল বি (অনার্স) এবং ১৯৯০ সালে ওই স্থান অটুট রেখেই এলএলএম ডিগ্রি নেন শিরীন শারমিন। ২০০০ সালে এসেক্স ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন।
১৯৯২ সালে বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসাবে তালিকাভুক্ত হন শিরীন। ১৯৯৪ সালে হাইকোর্ট বিভাগ ও ২০০৮ সালে আপিল বিভাগে অন্তর্ভুক্ত হন।
জেএন/পিআর