সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা সদরের বারোয়ারি বটতলা মহল্লার নিজ বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের এক সন্তানকে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় বিস্মিত এলাকাবাসী, ঘটনার সুষ্ট তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ দাবি করেছেন। এদিকে প্রাথমিকভাবে ঘটনার কারণ না জানা গেলেও পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দারা রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে এলাকার কালিচরণ সরকারের ছোট ছেলে বিকাশ সরকার (৪৫), তার স্ত্রী স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষি (১৫)র মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, তাড়াশ উপজেলা সদরের বায়োয়ারী বটতলা এরাকার ধনাঢ্য কৃষক বিকাশ, স্বর্ণা রানী সরকার (৪০) ও মেয়ে তাড়াশ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী পারমিতা সরকার তুষি (১৫)র ২ দিন ধরে কোন হদিস পাওয়া যাচ্ছিলনা।
পরে বাড়িতে গিয়ে কক্ষে তালা ঝুলোনো দেখে পুলিশকে জানানো হয়। মঙ্গলবার ভোর রাতে পুলিশ এসে বাড়ির তালা ভেঙ্গে কক্ষে প্রবেশ করে তাদের রক্ত মাখা লাশ পড়ে থাকতে দেখে।
মুহূর্তের মধ্যেই এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকা জুড়ে আতংক বিরাজ করে। ক্ষোভ সৃষ্টি হয় সবার মাঝে। শোকে বিহবল স্বজনদের কান্নায় ভাড়ী হয়ে ওঠে এলাকার আকাশ বাতাস।
এই বাড়ির তিন তলায় থাকতেন বিকাশ সরকারের পরিবার
এ ব্যাপারে নিহত বিকাশ সরকারের ভাগনে লিপন সরকার জানান, পুরো পরিবারটিকে সন্ত্রাসীরা শেষ করে দিয়েছে। পুর্ব শত্রুতার জের ধরে এ লোমহর্ষক ঘটনা ঘটতে পারে।
ধারণা, রাজশাহীর পুঠিয়াতে আমার এক বোনকে বিয়ে দিয়েছে বিকাশ মামা। তার স্বামী ও পরিবার আমার বোনকে মাঝে-মাঝে মারধর করে। ভাত-কাপড় দেয়না।
এ ব্যাপারে মামার তত্বাবধানে দায়ের করা মামলায় একজন জেলখানায় আটক রয়েছে। এজন্য তারা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটাতে পারে। আমরা সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে এর বিচার চাই, দায়ীদের ফাঁসি চাই।
উপজেলা সদরে চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনায় হতভাগ এলাকাবাসী, এই হত্যাকান্ড মেনে নিতে পারছেনা তারা।
এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের রজত চন্দ্র ঘোষ ও সভাপতি আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহিনুর আলম লাবু জানান, এই হত্যাকান্ড পুরো উপজেলাবাসীকে হতভাগ করেছে। আমরা বিন্সিত, আতঙ্কিত।
যেই এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকান্ডের সাথে যারাই দায়ী থাকুক আমরা চাইবো দ্রুত তাদের আটক করা হোক। এজন্য হত্যাকারীদের এমন শাস্তি দিতে হবে যাতে এর রায় ইতিহাস হয়ে থাকে।
বিষয়টি নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস) মোঃ সামিউল আলম জানান, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রাথমিকভাবে আমরা সব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছি।
ইতিমধ্যেই আইন প্রয়োগকারী সকল সংস্থাকে অবহিত করা হয়েছে। দায়ী যেই হোক আশা করছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা তাদের খুঁজে বের করে আটক করবো।
এদিকে স্বজনদের ধারণা, রোববার রাত থেকে সোমবার কোনো একসময়ে এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
জেএন/পিআর