মানব সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ চুল। আর চুলকে স্বাস্থ্য উজ্জ্বল রাখতে মানুষ যুগে যুগে প্রয়োগ করছে নানা রকম ফর্মূলা। তবে শীতের সময়ে চুলের চাই বাড়তি যত্ন। লম্বা অথবা খাটো চুল যেমনই হোক না কেন প্রাণোজ্জ্বল কেশ পেতে যত্নের বিকল্প নেই। অনেকেরই তেল ব্যবহারে অনীহা রয়েছে।
তবে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন অয়েল ম্যাসেজ করার এক-দু ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করলে চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ে। তেল দেওয়া অবস্থায় বাইরে না যাওয়াই ভালো।
কারণ তেলের মাধ্যমে ধুলাবালু মাথার তালুতে বেশি জমার সুযোগ পায়। তাই রাতে মাথায় তেল ম্যাসাজ করে, সকালে শ্যাম্পু করলে চুলগুলো হবে ঝরঝরে।
দৈনন্দিন কাজের জন্য শরীরের যেমন পুষ্টি প্রয়োজন তেমনি চুলেরও প্রয়োজন খাদ্য। আর এ খাবার না পেলে চুল নিষ্প্রাণ হয়ে যায়। চুলের খাবার হিসেবে অন্যতম ভূমিকা পালন করে তেল। তেল হালকা গরম করে চুলের গোড়া থেকে ডগা পর্যন্ত ম্যাসাজ করুন।
কর্মজীবী নারী ও পুরুষ সপ্তাহে ছুটির একটি দিনের কিছুক্ষণ চুলের যত্নে সময় দিন। দেখবেন চুলগুলো আপনার আত্মবিশ্বাস ও সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।
চুল ধোয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব শুকিয়ে নেবেন। চুল বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে গোড়া নরম হয়ে যায় এবং চুল ওঠার প্রবণতা বাড়ে। ভেজা চুল কখনোই চিরুনি দিয়ে আঁচড়াবেন না, গোড়া নরম থাকায় সহজেই চুল ওঠে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে চুল হেয়ার ড্রাই মেশিন দিয়ে শুকাবেন না। এর মাধ্যমে চুলের আগা ফাটা ও রুক্ষতা দেখা দিতে পারে।
শীতকালে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। এ সময়ে চুলে খুশকি হওয়া একটি কমন সমস্যায় পরিণত হয়েছে। আর খুশকি দূর করতে প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। এক্ষেত্রে হালকা গরম করা অয়েলের সঙ্গে লেবুর রস মিলিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করে আধা ঘণ্টা পরে শ্যাম্পু করুন।
এছাড়াও লেবুর রস, টক দই, মেহেদির গুঁড়া অথবা কাঁচা মেহেদি এবং মেথির গুঁড়া এসব উপকরণ একসঙ্গে মিলিয়ে চুলে ভালো করে দিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করতে হবে।
এভাবে সপ্তাহে ন্যূনতম একদিন করতে পারলেও চুলকে খুশকিমুক্ত রাখা যাবে এবং গোড়া শক্ত হবে। টকদই চুলকে ময়েশ্চারাইজ করবে। মেথি গুঁড়া চুলকে খুশকি মুক্ত করে এবং লেবুর রস চুলকে করে ঝলমলে।
অনেকেই ব্যস্ততার জন্য চুল আচড়ানোর সময় পান না। কেউ গৃহকাজে, কেউ অফিসের কাজে সবাই ব্যস্ত। চুল আঁচড়ানোর ফুসরত কোথায়? হয়তো অনেকেরই অজানা আমাদের মস্তিষ্ক সচল রাখতে চুল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চুল আঁচড়ানোর মাধ্যমে মাথার তালুতে ম্যাসাজ হয়। যা সচল রাখে মস্তিষ্ক। এজন্য সকালে অফিসে যাবার আগে ও রাতে ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়াবেন। এরফলে আপনার অনেক প্রশান্তি লাগবে।
গৃহিণীরা হয়তো ভাবেন চুল আঁচড়িয়ে আর কি হবে কেউ তো আর দেখছে না, মাথার ওপরে থাকে ওড়না অথবা শাড়ির আঁচল। তাদের জন্য বলছি, নিজেকে গুছিয়ে রাখুন নিজের জন্য। আপনি যখন নিজেকে গুছিয়ে রাখবেন তখন নিজের প্রতি আরও ভালোবাসা জন্মাবে। যা এক সময় অন্যের মাঝেও ছড়িয়ে পরে। তাই তো প্রবাদে আছে ‘যে রাধে সে চুলও বাঁধে’।
সকল কাজের মাঝেও নিজেকে গুছিয়ে রাখার মধ্যে আছে অন্যরকম ব্যক্তিত্ব। চুলকে বেশি আটসাট করে না বেঁধে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে হালকা করে আটকে রাখুন।
অনেকেরই ধারণা প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুল ভালো থাকবে। বিশেষ করে টিনএজরা এমনই ভাবেন। এটা একদম ভুল। অতিরিক্ত শ্যাম্পু করায় চুল নিষ্প্রাণ ও ভঙ্গুর হতে পারে। তাই চুল ভালো রাখতে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন শ্যাম্পু করুণ।
তবে যারা নিয়মিত চুল খোলা রেখে বাইরে যান, তারা একদিন পর পর শ্যাম্পু করবেন। চুল থাকবে ঝলমলে ও উজ্জ্বল। কারোরই কাম্য নয় অকালে চুল হারানো তাই সময় থাকতে চুলের যত্ন নিন।
জেএন/পিআর