নয় দিন পর সাফ’র শিরোপা হাতে পেল বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের নাটকীয় ফাইনালের টস কাণ্ডের পর বাংলাদেশ ও ভারত যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি ভারত চ্যাম্পিয়ন ট্রফি নিয়ে বাংলাদেশ ছাড়ে। আর বাংলাদেশ নয় দিন পর আজ চ্যাম্পিয়ন ট্রফি, মেডেল বুঝে পেয়েছে। টুর্নামেন্টের সেরা ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সাগরিকা।

- Advertisement -

সাফ কয়েক দিন আগেই পুরস্কারগুলো বাফুফের কাছে পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু বাফুফের পক্ষ থেকে একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হস্তান্তরের কথা জানানো হয় সাফকে। বাফুফে ভবনের সামনের মাঠে আজকের আয়োজনটি ছিল একেবারে সাদামাটা। জিমের পাশে একটি বোর্ড দাঁড় করিয়ে এবং সামনে ছোট্ট কার্পেট বিছিয়ে সাজ-সজ্জা শেষ।

- Advertisement -google news follower

এমনকি অনুষ্ঠান উপস্থাপনে সাফের এক্সিকিউটিভ কয়েক দফা মাইক নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। শেষ পর্যন্ত খালি গলায় ঘোষণা চালিয়ে যান। চ্যাম্পিয়ন দলের অনেক ফুটবলার এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাই আজ ট্রফি গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ১৩ জন।

পুরস্কার প্রদানের পর বাফুফের নারী উইংয়ের প্রধান ও ফেডারেশনের প্রভাবশালী সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণকে সাদামাটা অনুষ্ঠান নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী ট্রফিটা আমরা পাই। যেহেতু তারা খেলায় আসেনি। ট্রফিটা যেমন সেক্রেফাইস করেছি-তেমনি এটাও। অনেক খেলোয়াড়কে আমরা পাচ্ছি না পরীক্ষার কারণে।’

- Advertisement -islamibank

আজকের অনুষ্ঠান খানিকটা রংহীন হলেও সামনে বেশ কয়েকটি আনন্দের উপলক্ষ্য থাকছে আফিদাদের জন্য, ‘ইতোমধ্যে ওয়ালটন আমাদের দলের প্রত্যেককে একটা করে টিভি উপহার দেয়ার কথা বলেছিল ফাইনালে। আরো অনেক প্রতিষ্ঠানও আগ্রহী। আমরা এগুলো ধারাবাহিকভাবে জানাবো। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারী ফুটবল নিয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ওদের পুরস্কার নিয়েও আমরা কাজ করব।’

সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ মূলত বাংলাদেশের ফরোয়ার্ড সাগরিকাময়। দু’টি ম্যাচের জয়ের নায়ক এবং ফাইনালে শেষ মুহূর্তে সমতাসূচক গোলটিও তার। স্বাভাবিকভাবেই টুর্নামেন্ট সেরা সাগরিকা। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শেষে আগত মিডিয়ার সবার আগ্রহ টুর্নামেন্ট সেরা ও সর্বোচ্চ গোলদাতা পুরস্কার পাওয়া সাগরিকাকে ঘিরে। মাঠে প্রতিপক্ষকে তেড়েফুড়ে গোল করলেও সাংবাদিকদের সামনে একেবারে ভিন্ন সাগরিকা। খুব স্বল্প শব্দে উত্তর। টুর্নামেন্টে ব্যক্তিগত দুই পুরস্কার নিয়ে তার প্রতিক্রিয়া, ‘ভালো লাগছে। আমি দু’টি পুরস্কার পেয়েছি। আমি জানতাম না আমি পুরস্কার পাব। আজ সকালে শুনেছি।’

গতি, শটের পাওয়ার ও গোল করার ক্ষমতায় অনেকেই তার মধ্যে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনার ছায়া খোঁজে পাচ্ছেন। দুই জনের পজিশনও প্রায় একই। জুনিয়র সাফের সেরা খেলোয়াড় হয়েও অগ্রজ সাবিনাকে অনেক উপরেই রাখলেন, ‘সাবিনা আপুর জায়গায় যেতে পারব না। তারপরও চেষ্টা করব।’ কেন যেতে পারবেন না এমন সম্পূরক প্রশ্নে খানিকটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সাগরিকা, ‘আপুর খেলা আর আমার খেলা তো এক না। উনি অনেক সিনিয়র। তার জ্ঞান ও আমার জ্ঞান আলাদা। ঐ জায়গায় যেতে আমার অনেক পরিশ্রম করতে হবে।’

দ্বিতীয় সাবিনা হওয়া সময় সাপেক্ষ হলেও জাতীয় দলে নিজের জায়গা করে নিতে চান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের এই তারকা ফুটবলার, ‘আমি আরো সামনে এগিয়ে যেতে চাই। এজন্য আরো বেশি ভালো খেলে জায়গা তৈরি করতে চাই।বাংলাদেশের ফুটবলে এখন পরিচিত নাম সাগরিকা। টুর্নামেন্টের আগে-পরে কেমন পরিবর্তন দেখতে পাচ্ছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে সাগরিকা বলেন, ‘টুর্নামেন্টের আগে সাগরিকাকে কেউ চিনত না। এখন অনেকে চিনে।’

বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকারও সাগরিকার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন, ‘সাগরিকা অত্যন্ত ভালো খেলোয়াড়। আমাদের আস্থা ছিল সে গোল করবে এবং করেছেও।’ নারী দলের কোচ হিসেবে প্রথম সাফল্য পেলেন সাইফুল বারী টিটু। তিনিও খানিকটা তৃপ্ত, ‘ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, এমন একটা বোঝা ছিল আমার ওপর। চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেই দায়িত্বটা পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি। তবে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে আরো ভালো লাগতো।’

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM