বিমাশিল্পের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো সমাধানের জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, উন্নত দেশের ন্যায় জিডিপিতে বিমার অবদান বৃদ্ধি করতে আমাদের সরকার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
জাতীয় বিমা দিবস উপলক্ষে দেওয়া আজ এক বাণীতে একথা বলেন তিনি। শুক্রবার (১ মার্চ) বাংলাদেশে বিমাদিবস পালিত হবে।
এ বছরের বিমা দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে, “করব বিমা গড়ব দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে আর্থিক খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে বিমা শিল্পকে জাতীয়করণ করেন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিমা মানুষের জীবন ও সম্পদের ঝুঁকি হ্রাস করে থাকে। মূলত: আজকে বাংলাদেশের বিমা শিল্পের যে প্রসার ও ব্যাপ্তি তার শক্ত ভিত রচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে সামিল করা। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’; যেখানে দেশের প্রতিটি মানুষ বিশ্ব পরিমণ্ডলে নিজের অবস্থান দৃঢ় করতে সক্ষম হবে। এ লক্ষ্যে উন্নত দেশের ন্যায় জিডিপিতে বিমার অবদান বৃদ্ধি করতে হবে। এ অভিষ্ট সামনে রেখে আমাদের সরকার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং সকল নাগরিকের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার প্রয়াসে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণে বিমা সেক্টর ডিজিটালাইজেশনে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
সরকার প্রধান বলেন, এতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গ্রাহকসেবা উন্নত করা সম্ভব হবে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতিতে প্রভূত উন্নতি সাধিত হলেও, বিমাশিল্পে পেনিট্রেশনের হার কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে পৌঁছেনি।
তিনি বলেন, দেশে প্রয়োজনীয় সংখ্যক একচ্যুয়ারি সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃত্তি প্রদান করে ইতোমধ্যে ৩ জন শিক্ষার্থীকে যুক্তরাজ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। ব্যাংকের মাধ্যমে বিমা পণ্য বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে ব্যাংকাস্যুরেন্স নীতিমালা জারি করা হয়েছে। ব্যাংকাস্যুরেন্স চালু হলে বিপুল সংখ্যক মানুষকে বিমার আওতায় আনা সম্ভব হবে বলে আমার বিশ্বাস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এছাড়া প্রবাসী কর্মীদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য ‘প্রবাসী কর্মী বীমা’, অভিভাবকদের অকাল মৃত্যুতে শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন ঝরে যাওয়া রোধকল্পে ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বীমা’ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু সুরক্ষা বীমা’ চালু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিমাশিল্পের মান উন্নয়নে সর্বোত্তম গ্রাহকসেবার মাধ্যমে দ্রুত বিমাদাবি নিষ্পত্তি করতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে বিমার আওতায় আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলাসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবন ও জীবিকার জন্য ক্ষুদ্র বিমা, কৃষি বিমা, গবাদি পশু বিমা, স্বাস্থ্য বিমা ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি বিমার ব্যবস্থা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের আর্থিক খাতের অন্যতম স্তম্ভ হচ্ছে বিমা খাত; যা জাতীয় সম্পদের ও নাগরিকদের জীবনের ঝুঁকি প্রশমনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করে থাকে।
বিমার শুভ বার্তা দেশের সব নাগরিকের নিকট পৌঁছে যাক, দেশের সব মানুষ এবং সম্পদ বিমা সেবার আওতায় আসার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
জেএন/এমআর