রাজধানীর বেইলি রোডের বহুতল ভবনে ভয়াবহ আগুনে এখন পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়েছেন আরও অনেকে। এক মাস আগে চালু হওয়া একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
তাদের বর্ণনা অনুযায়ী, আগুন লাগা ভবনটির নাম গ্রিন কজি কটেজ। ভবনটির নিচ তলায় চায়ের চুমুক নামে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে সারা ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। মাত্র এক মাস আগে ভবনটির নিচ তলায় এই রেস্টুরেন্টেটি যাত্রা শুরু করে।
মো. নাবিল নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, আমার বাসা শান্তিনগরে। প্রায় প্রতিদিন বেইলি রোডে আসা হয়। গতকাল রাতে আমি বেইলি রোডে পাঞ্জাবি কিনতে আসি। রাত ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে দেখি চায়ের চুমুক নামে রেস্টুরেন্টের এক কর্মচারী চুলায় যেন কী করছেন। পরে হঠাৎ দেখি গ্যাসের চুলায় আগুন লেগে যায়। তখন নিচে থাকা অনেকেই আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। দ্রুত আগুন সারা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
দুলাল হোসেন নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, প্রথমে এসে দেখি নিচে চায়ের চুমুকে আগুন লেগেছে। তখন রেস্টুরেন্টেটির কর্মচারীরা ও একজন পুলিশ সদস্য আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা কোনোভাবেই আগুন নেভাতে পারেননি। অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে৷ চায়ের চুমুক রেস্টুরেন্টেটি মাত্র এক মাস আগে যাত্রা শুরু করে।
আব্দুল্লাহ আল নাসের নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আগুন লাগার পর অনেক মানুষ দুই তলায় অবস্থিত কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে আটকা পড়েন। তাদের মধ্যে কয়েকজন লাফিয়ে নিচে নামেন। বাকি কয়েকজন জীবন বাঁচাতে ছাদে চলে যান। তবে সিঁড়ি ছোট থাকায় অনেক মানুষ ছাদে যেতে পারেনি।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে অন্তত ৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, গুরুতর দগ্ধ হয়েছেন অন্তত ২২ জন। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল রাতে বেইলি রোডের যে ভবনে আগুন লেগেছে, সেটি সাততলা। ভবনের দ্বিতীয় তলায় ‘কাচ্চি ভাই’ নামের খাবারের দোকান রয়েছে। তৃতীয় তলায় একটি পোশাকের দোকান ছাড়া ওপরের তলাগুলোতেও রয়েছে খাবারের দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে খাবারের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড় হয়। অনেকেই পরিবার নিয়ে সেখানে খেতে যান।
তিনতলায় ছিল কাপড়ের দোকান। বাকি সব ছিল রেস্টুরেন্ট। রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল গ্যাস সিলিন্ডার। যে কারণে আগুনের তীব্রতা ছড়িয়েছে ভয়াবহভাবে।
জেএন/এমআর