গেল বছরের ১৯ ডিসেম্বর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে নাশকতার আগুনে মা-সন্তানসহ ৪ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু কাঁদিয়েছে সবাইকে। এর আগেও ট্রেনে নাশকতা হয়েছে অনেকবার। হতাহত আর ক্ষয়ক্ষতিও কম নয়। এসব ঘটনার পর টনক নড়েছে পূর্বাঞ্চল রেল কর্তৃপক্ষের। একের পর এক নাশকতা এবং দুর্ঘটনার পর সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে পূর্বাঞ্চলের সব ট্রেন। এতে, নাশকতা এবং পাথর ছোঁড়া বন্ধের পাশাপাশি যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে দাবি কর্তৃপক্ষের।
জানা গেছে, প্রথম ধাপে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী সুবর্ণ এক্সপ্রেস, সোনার বাংলাসহ ৫টি ট্রেনে সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোতেও ক্যামেরা বসানো হবে। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন যাত্রীরা। তারা বলছেন, এই উদ্যোগের ফলে যাত্রীদের চলাচলে নিরাপত্তা বাড়বে। পাশাপাশি অপরাধীরা কোনো অঘটন ঘটাতে ভয় পাবে।
এ বিষয়ে এক যাত্রী বলেন, সব ট্রেনে ক্যামেরা দিতে হবে যাতে যাত্রীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারে। সিসি ক্যামেরা অবশ্যই ট্রেনে প্রয়োজন রয়েছে।
আরেক যাত্রী বলেন, প্রায়ই পাথর ছোঁড়ার কারণে যাত্রী আহত হয়, মাথা ফেটে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। ক্যামেরা থাকলে কে পাথর মারলো তাকে চিহ্নিত করা যাবে। এর বাইরে ট্রেনে দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও নিরাপত্তারক্ষীরা প্রায়ই যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এটিও কমবে।
গুরুত্ব বিবেচনায় ধাপে ধাপে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের সব ট্রেনেই সিসি ক্যামেরা বসানোর কথা জানিয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার নাজমুল ইসলাম বলেন, সবগুলোকে বিবেচনা করে যেটির গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি সেটিতে আগে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। এরপর ধীরে ধীরে কম গুরুত্বপূর্ণগুলোতে সংযোজন করা হবে।
সিসি ক্যামেরা মনিটরিংয়ের দায়িত্বে রেলওয়ে পুলিশ থাকছে জানিয়েছে চট্টগ্রামের রেলওয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে আমাদরে জিরো টলারেন্স। কয়েকটি বিষয়কে সামনে রেখে আমরা রেলের নিরাপত্তায় কাজ করছি। এটি চলছে। মনিটরিংও চলছে।
তবে নাশকতা বন্ধে সিসি ক্যামেরার চেয়ে জনসচেতনতা তৈরি বেশি দরকার বলছেন বিশ্লেষকরা। এ বিষয়ে চট্টগ্রাম সুজনের সাধারণ সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, সঠিকভাবে তদন্ত করে দোষী কারা, তাদের সাথে কারা সংশ্লিষ্ট সেটি বের করে আনতে হবে। পূর্বে যারা অপরাধ করেছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি মানুষের মধ্যে জনসচেতনতা বাড়ানো জরুরি।
জেএন/এমআর