ভোটের হাওয়ায় সরগরম চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই ) আসন। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই উচ্চারিত হচ্ছে কে পাচ্ছেন এ আসনে ধানের শীষ। এ নিয়ে সর্বত্র চলছে গুঞ্জন।
এই আসনে নৌকার একক প্রার্থী গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন । তবে ধানের শীষের মনোনয়ন পান ৩ জন। এরা হলেন মিরসরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, ব্যবসায়ী কামাল আহম্মেদ ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লায়ন মনিরুল ইসলাম ইউসুফ। এরমধ্যে নুরুল আমিনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ নিয়ে আপিল করেছেন তিনি। তাই শেষ পর্যন্ত মোশাররফের সঙ্গে কে লড়বেন! ইউসুফ নাকি ব্যবসায়ী কামাল ? এ নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীসহ স্থানীয় ভোটারদের মধ্যে চলছে জল্পনা-কল্পনা ।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, কৌশলগত কারণে একটি আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছে দলটি। চিঠি গ্রহণের সময় প্রত্যেক প্রার্থীই প্রত্যাহারপত্রে অগ্রিম স্বাক্ষর করে এসেছেন। নির্ধারিত তারিখে মূল প্রার্থী ছাড়া অন্যদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ জন্য অপেক্ষা করতে হবে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী লায়ন মনিরুল ইসলাম ইউসুফের ছেলে আওয়ামী লীগ আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সদস্য নিয়াজ মোরশেদ এলিট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের এক ভিডিওতে আহ্বান জানিয়েছেন, ‘আমার বাবাকে আপনারা ভোট দেবেন না!’ ভিডিওটি প্রকাশের পর ফেসবুকে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গেছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই।
মনিরুল ইসলাম ইউসুফ জয়নিউজকে বলেন, দীর্ঘদিন ব্যবসা করেছি। এবার সরাসরি জনসেবা করতে চাই। আগামী নির্বাচনে আমাকে দলের হাইকমান্ড থেকে মনোনীত করায় আমি আনন্দিত। আমি দলের আস্থার প্রতিদান দিতে চাই।
তাঁকে ভোট না দেওয়ার জন্য ছেলে এলিটের আহ্বান বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এ সব আমার ছেলে বলেনি। আওয়ামী লীগ বলেছে। তিনি বলেন, আমার স্ত্রী আমাকে ভোট দেবে। আমার ছেলের কথা শুনবে কেন!
নিজেকে বিএনপি চেয়ারপারসনের আস্থাভাজন দাবি করে তিনি বলেন, ম্যাডামের (খালেদা জিয়া) সবুজ সংকেত পাওয়ায় আমি এলাকায় গিয়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে কাজ করছি।
চূড়ান্ত মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের জন্য আমার অবদান আছে। বিএনপি মুক্তিযোদ্ধাদের দল। বিএনপি অবশ্যই আমাকে মনোনয়ন দেবে। এলাকায় আমার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। মনোনয়ন পেলে আমিই জিতব। তবে চূড়ান্ত মনোনয়ন না পেলেও আমি দলীয় প্রার্থীর জন্য কাজ করব।
অপরদিকে ব্যবসায়ী কামাল আহম্মেদ জয়নিউজকে বলেন, ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। যদি সরকার গ্রেফতার বন্ধ করে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে করে, তাহলে সারাদেশে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
মিরসরাই এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল হক জিয়া জয়নিউজকে বলেন, এ আসনে বিএনপির শত্রু বিএনপিই। কারণ কেন্দ্র থেকে যে কোনো একজন ধানের শীষ প্রতীক পাবেন। আরেকজন তখন বিএনপির জন্য কাজ করে কি-না এ সন্দেহ থেকে যাচ্ছে। বাবার বিপক্ষে ছেলের ধানের শীষে ভোট না দেওয়ার আহ্বানকে তিনি এক ধরনের অতি রাজনীতি মনে করেন। বলেন, তিনি (এলিট) কৌশলে বাবাকে অর্থাৎ বিএনপিকে ভোট দেওয়ার কথাই বলেছেন।
অন্যদিকে মিরসরাইয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রক্ষার জন্য নৌকার প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফকে জনগণ আবার ভোট দিতে পারে, যোগ করেন তিনি।