সুইজারল্যান্ডের মেডিটেরেনিয়ান শিপিং কোম্পানি ও ভারতভিত্তিক সি কোস্ট শিপিং সার্ভিসের দুটি কনটেইনার এসেছে চট্টগ্রাম বন্দরে। একটির মালিক হংকংয়ের ‘ফ্লোরেন্স’, অন্যটি ‘সিনারি নামের পৃথক প্রতিষ্ঠানের।
একইদিন পৃথক দুটি জাহাজ থেকে নামানো কনটেইনার দুটির নম্বর একই। যদিও পুরো বিশ্বে কনটেইনার পরিবহনে একটি ইউনিক নম্বর ব্যবহৃত হয়, যা কখনোই অন্যটির সঙ্গে মিলে না। তাই এর পেছনে বড় ধরনের কোনো জালিয়াত চক্রের হাত আছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর দুই কনন্টেইনার নিয়ে তোলপাড় চলছে চট্টগ্রাম বন্দরে। তদন্তে পৃথক কমিটি গঠন করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ও চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত ৪ মার্চ পৃথক দুটি জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোর সময় বন্দরের নিজস্ব কনটেইনার টার্মিনাল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (সিটিএমএস) বিষয়টি ধরা পড়ে। দেখা যায়, দুটি কনটেইনারই এসেছে এফসিআইইউ৩২৮৭০৯১ নম্বরে। পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি কাস্টম হাউসকে জানায়। এরপর কাস্টমস কর্তৃপক্ষ পণ্যের চালান দুটি অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে লক করে দেয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে কনটেইনারে ইউনিক সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হয়। কিন্তু দুটি কনটেইনারের সিরিয়াল নম্বর কেন একই হলো, সেটি আমরা তদন্ত করে দেখছি। এ ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সহকারী টার্মিনাল ম্যানেজার কামরুল ইসলাম মজুমদারকে আহ্বায়ক করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তারা আইজিএম, সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ও লোডিং বন্দরের তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখবে।’
এদিকে, কাস্টমস কর্তৃপক্ষ থেকেও একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা কনটেইনারে করে নিয়ে আসা পণ্যের তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তারা কনটেইনারে থাকা পণ্যের শতভাগ কায়িক পরীক্ষা করবে বলে জানান সচিব ওমর ফারুক।
চট্টগ্রাম বন্দরের তথ্যমতে, ২০২২ সালের ২২ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দরে একই নম্বরের দুই কন্টেইনার আসার ঘটনা ঘটে। কন্টেইনার দুটিতে নম্বর এক হলেও সিল ছিল ভিন্ন। এরমধ্যে এসএলএইচইউ৪৫০০৪৮০, (সিল-০০১৫৩৫) কন্টেইনারে ছিল কম্পিউটার প্রিন্টার, স্ক্যানার, মাউস, কিবোর্ড।
আর এসএলএইচইউ৪৫০০৪৮০ (সিল-জিটিএস-০০৫৯৪৬) কন্টেইনারে ছিল সোলার ফটোভলটেক পাম্পিং সিস্টেম। দুটিই এক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের। কিন্তু এবার আসা দুই কন্টেইনারই দুই মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ‘এ ধরনের ভুল হওয়ার কথা নয়। প্রত্যেক কনটেইনারের আলাদা আইডি থাকে। সেই আইডি দিয়ে ট্রেকিং সিস্টেমে কন্টইনারের অবস্থান মনিটর করা হয়। একই নম্বরের দুটি কন্টেইনার হলে একটিই শনাক্ত হবে। ঘোষণা অনুযায়ী, পণ্য পাওয়া না গেলে বড় ধরনের কোনো জালিয়াতচক্র এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।’
জেএন/এমআর