চিনি-এলাচের দামের লাগাম টানতে খাতুনগঞ্জে অভিযান

হিমেল ধর :

এস আলম সুগার কারখানায় আগুন লাগার পর চিনির দাম না বাড়াতে সরকারের পরার্মশ আর প্রশাসনের হুঁশিয়ারি পর কোন কিছুই থামাতে পারছে না ব্যবসায়ীদের। এছাড়া এলাচের বাজারও গতকয়েকদিন ধরে অস্থির তাই অভিযানে নেমেছে জেলা প্রশাসন।

- Advertisement -

রোববার (১০ মার্চ) চট্টগ্রামের বৃহত্তম পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিয়মিত বাজার মনিটরিং এর অংশ হিসেবে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন।

- Advertisement -google news follower

এদিকে সংকটের অজুহাতে খাতুনগঞ্জের বাজারে গত ৫ দিন ধরে বাড়ছে চিনির দাম। এস আলম কর্তৃপক্ষ এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হয়েছে চিনির কারখানার আগুন বাজারে কোন প্রভাব ফেলবে না। তবে বাজার চলছে উল্টোপথে।

আগুন লাগার খবরের পরদিন বাজারে প্রতি বস্তা চিনির দাম বাড়ে ২০ টাকা, এরপর ৮০ টাকা এবং বৃহস্পতিবার বাজারে দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ২০০ টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রতিকেজিতে দাম বেড়েছে ৪ টাকা। বর্তমানে বাজারে পাইকারিতে প্রতিকেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৩৮ টাকায় দরে।

- Advertisement -islamibank

এসময় চট্টগ্রামের অন্যতম বড় পাইকারি চিনি বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান আর এম এন্টারপ্রাইজকে ৩০ হাজার টাকা এবং নাবিল গ্রুপকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামে এলাচের সবচেয়ে বড় আমদানীকারক এ বি ট্রেডার্সকে অতিরিক্ত মূল্যে এলাচ বিক্রয়ের জন্য ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

জেলা প্রশাসন এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব প্রতীক দত্ত এ অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান শেষে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে এস আলম সুগার মিলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরে খুচরা বাজারে চিনির দাম কেজিপ্রতি ৫ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে, তবে পাইকারি বাজারটি স্থিতিশীল রয়েছে। আসন্ন রমজানে যেন চিনির পাইকারি ও খুচরা বাজার দুটোই স্থিতিশীল থাকে সে উদ্দেশ্যে আজ অভিযান চালানো হয়েছে।

চিনি বিক্রয়কারী দুটি প্রতিষ্ঠান আর এম এন্টারপ্রাইজ এবং নাবিল গ্রুপ কারো কাছেই কোন ক্রয় বিক্রয় রশিদ সংরক্ষিত ছিল না। ফলে তারা কত টাকায় কিনছেন বা বিক্রি করছেন তা আমরা জানতে পারছি না। এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগে বাজারে চিনির দাম বাড়িয়ে ফেলছে। এজন্য সতর্কতামূলক ভাবে দুটি প্রতিষ্ঠানকে যথাক্রমে ৩০ ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়া এ বি ট্রেডার্স এর এলসি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে তাদের প্রতি কেজি এলাচ আমদানি করতে ট্যাক্স ও আনুসঙ্গিক অন্যান্য খরচ সহ প্রায় ১হাজার ৪৫০ টাকা পড়েছে।

কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী পাইকারি পর্যায়ে ১৫% লাভ করলে দাম ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে থাকার কথা। তবে ঐ প্রতিষ্ঠানে এলাচ বিক্রি হচ্ছিল ২ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিষ্ঠান প্রধানকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং তিনি জনসমক্ষে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে শ্রেণী অনুযায়ী ১হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকার বেশী তিনি এলাচ বিক্রি করবেন না।

অভিযানের সার্বিক সহযোগিতা করেন কৃষি বিপণন কর্মকর্তা জনাব মোর্শেদ কাদের এবং কোতোয়ালি থানা পুলিশ এর একটি দল।

জানা যায়, দেশে প্রতিমাসে চিনির চাহিদা থাকে এক লাখ টনের মতো। রোজায় তা বেড়ে দাঁড়ায় ২ থেকে আড়াই লাখ টনে। রমজানকে ঘিরে দেশে চিনি আমদানীর চিত্রও উর্ধ্বমুখী। জানুয়ারিতে দেশে ৯৩ হাজার টন চিনি আমদানি হয়। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২৭ হাজার টনে। চট্টগ্রাম বন্দরে আরও দুটি জাহাজে ১ লাখ ১২ হাজার টন চিনি খালাসের কার্যক্রম চলছে।

জেএন/হিমেল/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM