পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষ্যে বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে দেওয়া এক শুভেচ্ছাবার্তায় গাজায় ‘ঘৃণ্য অপরাধের’ অবসান চেয়েছেন সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলাজিজ আল সৌদ।
সোমবার রমজানের চাঁদ দেখা দেওয়ায় মঙ্গলবার থেকে রোজা শুরু হয়েছে সৌদিতে। চাঁদ দেখা যাওয়ার পর এক শুভেচ্ছা বার্তায় সৌদি বাদশাহ বলেন, ‘সৌদি আরব ও বিশ্বের মুসলিম সম্রদায়ের জন্য রমজান মাস একটি আশীর্বাদ। আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের জন্য এই মাসে মুসলিমরা রোজা রাখেন, নামাজ পড়েন। কিন্তু এবারের পবিত্র রমজানে মুসলিমদের সিয়াম সাধনার ওপর ছায়া ফেলেছে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার যুদ্ধ।’
‘চলতি বছরের রমজান মাস আসার প্রারম্ভে গাজা উপত্যকার ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদের হৃদয় ভারাক্রান্ত। আমাদের ফিলিস্তিনি ভাই-বোনেদের প্রাণহানি-ভোগান্তিতে আমাদের মন কাঁদছে।’
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।
১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।
অভিযানে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৭২ হাজার। নিহত ও আহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অভিযোগ— গাজায় অভিযান চালানোর পাশাপাশি সেখানে ত্রাণ সরবরাহ প্রবেশেও বাধা দিচ্ছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। ত্রাণ পণ্যবাহী ট্রাকের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা বর্ষণের বেশ কয়েকটি ঘটনাও ঘটেছে সেখানে।
এদিকে ত্রাণের অভাবে মানবিক বিপর্যয় শুরু হয়েছে যুদ্ধ জর্জরিত গাজা উপত্যকায়। খাদ্যের অভাবে সেখানে মরতে শুরু করেছে মানুষ; বিদ্যুৎ-চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে হাসপাতাল গুলো পরিণত হয়েছে মৃত্যুপুরীতে।
জেএন/এমআর