দেশের সব সেক্টরের উন্নয়নে প্রায় সাড়ে ১৩শ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। এইসব প্রকল্প দেশের উন্নয়নের জন্য হলেও অর্থ বরাদ্দে প্রকল্পের গুরুত্ব বিবেচনা করা হয়। গুরুত্ব বিবেচনা করেই প্রকল্পগুলোতে কম-বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়। এবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় চার খাতের প্রকল্পকে গুরুত্ব দিয়ে অর্থ বরাদ্দে অগ্রাধিকার দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। এই সভায় প্রকল্পভিত্তিক অর্থ বরাদ্দ দিয়ে সাধারণ নির্দেশনা দিয়েছেন সরকারপ্রধান।
অর্থ বরাদ্দে যেসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে
১. দারিদ্র্য নিরসন, জিডিপির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিতকরণ, কর্মসংস্থান সৃজন ও আয়বৃদ্ধির সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন প্রকল্পগুলোর অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে আরএডিপিতে অর্থ বরাদ্দের চাহিদা প্রস্তাব করতে হবে।
২. বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রেখে আরএডিপিতে খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ খাত এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের চাহিদা প্রদানে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৩. অর্থ বরাদ্দের চাহিদা দিতে সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে গৃহীত উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহায়ক প্রকল্প গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে।
৪. এলাকা/অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পগুলো অর্থ বরাদ্দের চাহিদা প্রদান নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সম্পদের সীমাবদ্ধতা বিবেচনা করে আরএডিপিতে নতুন প্রকল্প গ্রহণের চেয়ে চলমান প্রকল্প সমাপ্ত করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
৬. অনুমোদিত প্রকল্প দলিলে প্রাইস কন্টিনজেন্সি ও ফিজিক্যাল কন্টিনজেন্সি খাতে সংস্থানকৃত অর্থ ‘সরকারি খাতে উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন, প্রক্রিয়াকরণ, অনুমোদন ও সংশোধন নির্দেশিকা’ অনুসরণ করে ব্যয় প্রস্তাব করতে হবে। বিদ্যমান নির্দেশিকা অনুযায়ী যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে ডিপিপির সংস্থান পরিবর্তন ব্যতিরেকে এ খাতের অর্থ প্রকল্পের অনুকূলে অন্য কোনো খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব করা যাবে না।
৭. সংশোধিত এডিপির সেক্টরের নির্ধারিত জিওবি বাবদ মোট বরাদ্দ অপরিবর্তিত রেখে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নিজস্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগের আন্তঃপ্রকল্পে অর্থ বরাদ্দের চাহিদা সমন্বয় করা যাবে।
৮. বৈদেশিক অর্থায়ন সংশ্লিষ্ট (ঋণ/অনুদান চুক্তি স্বাক্ষরিত, ঋণ/অনুদান প্রাপ্তির সুনিশ্চিত অঙ্গীকারপ্রাপ্ত) প্রকল্পে চলতি অর্থবছরে প্রাপ্ত প্রকল্প ঋণ/অনুদান ব্যবহারের নিমিত্ত পরিপূরক জিওবি বরাদ্দের প্রস্তাবকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
৯. জাপান ঋণ মওকুফ অনুদান তহবিল (ডিআরজিএ) এবং জাপান ঋণ মওকুফ অনুদান প্রতিরূপ তহবিল (ডিআরজিএসিএফ) ইআরডি থেকে প্রকল্প ঋণ/অনুদান হিসেবে উল্লেখ করা না হলে জিওবি হিসেবে বিবেচিত হবে।
১০. যেসব প্রকল্পে জিওবি বা প্রকল্প ঋণ/অনুদানের পাশাপাশি বাস্তবায়নকারী সংস্থার অর্থায়ন রয়েছে সেসব প্রকল্পের ক্ষেত্রে স্ব-অর্থায়নকৃত অর্থের বরাদ্দ প্রতিফলন করতে হবে।
১১. শুধু অনুমোদিত প্রকল্প বরাদ্দসহ আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। এএমএস-এ অন্তর্ভুক্তি ব্যতীত নতুন অনুমোদিত প্রকল্প আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্ত বা বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব করা যাবে না।
১২. প্রকল্পভিত্তিক চাহিদা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আরএডিপিতে বরাদ্দের পাশাপাশি ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বরাদ্দের প্রক্ষেপণ এএমএস-এ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জেএন/এমআর