বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র দায়িত্ব নিয়েছে সোমালিয়ান জলদস্যুদের অপর একটি দল। তাদের হাতে জাহাজটি বুঝিয়ে দিয়ে আগের দলটি জাহাজ ছেড়ে গেছে। সোমালিয়ান সময় দুপুর ১টার দিকে এ হস্তান্তর প্রক্রিয়া শেষ হয়। নতুন যারা দায়িত্ব নিয়েছেন তাদের সবার হাতে ভারী অস্ত্র।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এ তথ্য জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জিম্মি নাবিক।
তিনি জানান, বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এই মুহূর্তে সোমালিয়ার গারাকাড উপকূল থেকে ২০ মাইল দূরে নোঙ্গর করা আছে। নোঙ্গর করার পর ১৯ জনের একটি নতুন দল জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয়। অন্যদিকে জাহাজ হাইজ্যাকে নেতৃত্ব দেওয়া ৫০ জনের বেশি সংখ্যার দলটি জাহাজ ছেড়ে যায়।
জিম্মি নাবিক বলেন, জলদস্যুদের প্রথম দলটি অনেকটা হালকা অস্ত্র বহন করছিল। এখন যারা দায়িত্ব নিয়েছে ওদের সবার হাতে ভারী অস্ত্র। তবে তারা নাবিকদের সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করেনি। বরং এক রুমের বন্দিদশা থেকে সবাইকে যার যার রুমে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। রাতে সেহেরি দিয়েছিল, আশা করা যাচ্ছে ইফতারও দেবে।
তিনি আরও জানান, এমভি আবদুল্লাহ’র পিছু নেওয়া জাহাজটি এখনো ২০ ন্যটিক্যাল মাইল দূর থেকে পর্যবেক্ষন করছে। জলদস্যুরা বলছে, এমনটা হলে জিম্মি নাবিকদের সমস্যা হতে পারে।
বাংলাদেশি জাহাজের নাবিকরা আশা করছেন, এই পর্যায়ে দস্যুরা হয়তো জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
তাই দেশের গণমাধ্যমকে কোনো অতি উৎসাহী নিউজ না করার অনুরোধ জানান এই নাবিক।
এদিকে উদ্ধার করতে আসা জাহাজটি বুধবার বিকেল থেকে বাংলাদেশি জাহাজটিকে অনুসরণ করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, আরব আমিরাত বা অন্য কোনো আরব দেশের হবে এটি।
বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ’র নাবিকদের উদ্ধারে ওই জাহাজটি অভিযান চালায়। এসময় দুপক্ষের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়। তবে দস্যুরা জিম্মিদের হত্যার হুমকি দিলে উদ্ধারকারী জাহাজটি পিছিয়ে যায়।
এর আগে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়ে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। সে সময় সোমালিয়া উপকূল থেকে ৪৫০ ন্যাটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল জাহাজটি। দস্যুদের কাছে জিম্মি ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিক ও ক্রু।
আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে জাহাজটি জলদস্যুর কবলে পড়ে। এরপর বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে জাহাজটি ভারত মহাসাগর থেকে সোমালিয়া নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করে দস্যুরা।
জেএন/এমআর